‘মদ্যপ’ ভাসুরকে দা দিয়ে ‘কোপালেন’ স্কুল শিক্ষিকা! চাঞ্চল্য অশোকনগরে

অশোকনগর পুলিশ জানিয়েছে, দাস পরিবারের তরফ থেকে রেবাদেবীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পারিবারিক বয়ানের ভিত্তিতে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

'মদ্যপ' ভাসুরকে দা দিয়ে 'কোপালেন' স্কুল শিক্ষিকা! চাঞ্চল্য অশোকনগরে
অভিযুক্ত রেবা সর্দার (দাস), নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 08, 2021 | 10:02 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: পারিবারিক অশান্তিকে কেন্দ্র করে নিজের ভাসুরকে দা দিয়ে কোপ মারার অভিযোগ উঠল বৌমার বিরুদ্ধে। মদ খেয়ে অত্যাচার করতেন ভাসুর, পাল্টা অভিযোগ বৌমার। মঙ্গলবার দুপুরে, চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ঘুমার খ্রিস্টান পাড়ায়।

আহত সুদীপ দাসের পরিবারের অভিযোগ, রেবা সর্দার (দাস) পেশায় স্কুল শিক্ষিকা। মঙ্গলবার, পারিবারিক জমিজমা ও সম্পত্তির লোভে নিজের ভাসুরকে দা দিয়ে কোপ মেরে খুন করতে যান রেবা এমনটাই অভিযোগ। এর আগেও রেবা দুইবার তাঁর ভাসুরকে কোপানোর চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, সম্পত্তির জন্য দাসবাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের কাউকে আসতে দেননা বলেও অভিযোগ করেছেন সুদীপের পরিজনরা। এদিন দুপুরে, রেবাদেবী সুদীপবাবুকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে অচৈতন্য হয়ে পড়েন সুদীপবাবু। বাড়ির মধ্যে রক্তারক্তি কাণ্ড দেখে পরিজনদের ফোন করে খবর দেন রেবার বৃদ্ধা শাশুড়ি। খবর পেয়েই ছুটে আসেন তাঁরা। আহত অবস্থায় সুদীপকে অশোকনগর ঈশ্বরী গাছা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। ক্রমশ তাঁর অবস্থার অবনতি হলে বারাসাত হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সুদীপবাবুর মাথায় ১১ টি সেলাই পড়েছে। প্রচুর রক্তপাতও হয়েছে। রেবার বিরুদ্ধে অশোক নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুদীপবাবুর পরিজনেরা। যদিও এই ঘটনায় রেবাদেবীর স্বামীকে পাওয়া যায়নি। তিনি বাইরে কর্মরত বলে জানিয়েছে দাস পরিবার।

আহত সুদীপবাবুর ভগ্নিপতি সুব্রত দে বলেন, “রেবার অনেক টাকা। সম্পত্তিরও খুব লোভ। ও আমাদের দাস পদবি ব্যবহার করে না। সর্দার পদবি ব্যবহার করে। আমার শাশুড়ি আমায় আজ ফোন করে বলেন, বড়বউ সুদীপকে কুপিয়েছে। আমি সেই শুনে ছুটতে ছুটতে এসে সুদীপকে উদ্ধার করি। হাসপাতালে নিয়ে যাই। এর আগেও রেবা বারদুয়েক সুদীপকে কুপিয়েছিল। ওই বাড়িতে কাউকে আসতে দেয় না। বোনেদের সঙ্গেও কোনও সম্পর্ক রাখেনি। সম্পত্তি, জমিজায়গার লোভে এসব করেছে। আমরা অশোকনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।”

যদিও, শ্বশুরবাড়ির সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে রেবাদেবী বলেন, “আমি আমার ভাসুরকে দা দিয়ে কোপাইনি। মঙ্গলবার দুপুরে, যখন উনি বাড়ি ফেরেন তখন প্রকৃতস্থ ছিলেন না। মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফেরেন। আমাকে দেখে ধর্ষণের হুমকি দেন। তারপর আমার উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেন। মারধর করেন। আমার মাথা ফেটে যায়। আমি তখন প্রাণে বাঁচতে ওঁকে ধাক্কা দিই। পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পান উনি। আমার কোনও সম্পত্তিরও দরকার নেই। সমস্ত সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা হয়ে গিয়েছে। আমি এই পরিবারে একমাত্র উপার্জনশীল। শিক্ষিকা। তাই আমাকে দেখে ওঁরা হিংসে করেন। সেইজন্য আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।”

অশোকনগর পুলিশ জানিয়েছে, দাস পরিবারের তরফ থেকে রেবাদেবীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পারিবারিক বয়ানের ভিত্তিতে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে, প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, পারিবারিক অশান্তির জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুন: বন্ধ ক্লাসরুমে ছাত্রীদের সঙ্গে ‘অশালীন আচরণ’! খবর পেতেই প্রধান শিক্ষককে গাছে বেঁধে গণপ্রহার, পরানো হল জুতোর মালা