বন্ধ ক্লাসরুমে ছাত্রীদের সঙ্গে ‘অশালীন আচরণ’! খবর পেতেই প্রধান শিক্ষককে গাছে বেঁধে গণপ্রহার, পরানো হল জুতোর মালা

নিগৃহীতা এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, "মেয়েকে চাল-ডাল আনতে বললে মেয়ে স্কুলে আসতে চায়নি। ঘর-দোর পরিষ্কার করানোর নাম করে মেয়ের গায়ে হাত দিত সঞ্জীব মাষ্টার। শুধু আমাদের বাড়ির মেয়ে নয়, সব মেয়েদের সঙ্গেই একই কাজ করত। আজ জানতে পেরেই সকলে মিলে একজোট হয়ে স্কুলে যাই।"

বন্ধ ক্লাসরুমে ছাত্রীদের সঙ্গে 'অশালীন আচরণ'! খবর পেতেই প্রধান শিক্ষককে গাছে বেঁধে গণপ্রহার, পরানো হল জুতোর মালা
অভিযুক্ত সেই শিক্ষক, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 08, 2021 | 8:59 PM

দক্ষিণ দিনাজপুর: করোনাকালে প্রায় একবছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ স্কুল। পঠনপাঠন বন্ধ থাকলেও মিড-ডে মিলের খাবার নিতে স্কুলে যান অভিভাবকরা। আসেন শিক্ষকরাও। স্কুল বন্ধ থাকাকালীন ছাত্রীদের বন্ধ ক্লাস রুমে ডেকে নিয়ে গিয়ে অশালীন আচরণ (Molestation) করার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারীর কড়ই প্রাথমিক স্কুলে। মঙ্গলবার প্রধানশিক্ষকের ‘কুকীর্তির’ খবর সামনে আসতেই গণপ্রহারের শিকার হলেন অভিযুক্ত ওই শিক্ষক।

স্কুলপড়ুয়াদের অভিভাবকদের অভিযোগ, করোনায় স্কুল বন্ধ থাকলেও মাঝেমধ্যে স্কুলে আসতেম প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব বিশ্বাস। মিড-ডে মিল নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট দিনে আসেন অভিভাবকরাও। সেইদিন উপস্থিত থাকেন কিছু স্কুল শিক্ষকও। কিন্তু অন্যান্য দিন অভিযু্ক্ত শিক্ষক একা স্কুলে এলে ডেকে পাঠাতেন ছাত্রীদের। ‘হেডস্যারের’নির্দেশ অমান্য না করেই স্কুলে আসত ছাত্রীরা। তখন তাদের ডেকে নিয়ে গিয়ে বন্ধ ক্লাসরুমে অশালীন আচরণ (Molestation) করতেন ওই শিক্ষক। মঙ্গলবার, ফের স্কুলে আসেন প্রধান শিক্ষক। তারপর চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুলে ডেকে পাঠান ঘর পরিষ্কারের জন্য। কিন্তু ওই ছাত্রী স্কুলে যেতে অস্বীকার করে। বাড়ির লোক এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে ওই ছাত্রী সব ঘটনা খুলে বলে। শোনার সঙ্গে সঙ্গেই স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষকের উপর চড়াও হয়। অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে স্কুল থেকে টেনে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন অভিভাবকরা। গলায় পরানো হয় জুতোর মালা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বংশীহারী থানার পুলিশ। অভিযুক্ত শিক্ষককে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করে পুলিশ।

নিগৃহীতা এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, “মেয়েকে চাল-ডাল আনতে বললে মেয়ে স্কুলে আসতে চায়নি। ঘর-দোর পরিষ্কার করানোর নাম করে মেয়ের গায়ে হাত দিত সঞ্জীব মাষ্টার। শুধু আমাদের বাড়ির মেয়ে নয়, সব মেয়েদের সঙ্গেই একই কাজ করত। আজ জানতে পেরেই সকলে মিলে একজোট হয়ে স্কুলে যাই। তারপর ওই সঞ্জীব মাষ্টারকে ধরে বেঁধে রাখি। আমরা চাই, উনি যেন কোনওদিন এ তল্লাটে আসতে না পারেন। ওঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হোক।” স্কুলের সহ-শিক্ষক অসীম কুমার মজুমদার জানিয়েছেন গোটা ঘটনাটি স্কুলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। স্কুল কমিটি গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখবে এবং যথাযথ পদক্ষেপ করবে। বংশীহারী থানার সাব ইনস্পেকটর মকসেদ আলম সরকার বলেছেন, “এদিনই প্রথম অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক নিজের দোষ শিকার করেছেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, স্কুল পড়ুয়াদের নিরাপত্তাও যাতে নিশ্চিত করা যায়, সেই দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।”

আরও পড়ুন: বাড়ি বসে মাইনে নিতে ‘লজ্জা’, করোনা আবহে অ্যাম্বুল্যান্স দান শিক্ষিকার