টিকার গেরো, বন্ধের মুখে ভারত-বাংলাদেশ পণ্য পরিবহণ

করোনা ঠেকাতে কঠিন সিদ্ধান্ত। ভারত থেকে বাংলাদেশগামী পণ্যবাহী লরি চালক ও খালাসিদের করোনা টিকা নিতে হবে। না হলে মিলবে না সীমান্ত পার হওয়ার ছাড়পত্র। খোদ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী মহলের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ এ দেশের ব্যবসায়ীরা। ফলে বন্ধের মুখে ব্যবসা।

টিকার গেরো, বন্ধের মুখে ভারত-বাংলাদেশ পণ্য পরিবহণ
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 08, 2021 | 8:49 PM

হিলি: করোনা ঠেকাতে কঠিন সিদ্ধান্ত। ভারত থেকে বাংলাদেশগামী পণ্যবাহী লরি চালক ও খালাসিদের করোনা টিকা নিতে হবে। না হলে মিলবে না সীমান্ত পার হওয়ার ছাড়পত্র। খোদ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী মহলের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ এ দেশের ব্যবসায়ীরা। ফলে বন্ধের মুখে ব্যবসা।

এত সংখ্যক লরি চালক ও কর্মীকে এত তাড়াতাড়ি কীভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। পাল্টা ভারতের ব্যবসায়ীরা আগামিকাল অর্থাৎ, বুধবার থেকে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন।

মূলত, ভারতের আমদানি রফতানি ব্যবসায়ীদের সংস্থা হিলি এক্সপোটার্স এন্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশের বাংলা হিলি কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের মত পার্থক্যের জেরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে বন্ধ হতে চলেছে আমদানি রফতানি ব্যবসা। যার জেরে কয়েকশো লরি চালক ও খালাসিদের রুজিরোজগারে টান পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে বহির্বাণিজ্য করে ভারত ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন হিলি সীমান্ত দিয়ে গড়ে ১৫০-১৮০ পণ্যবাহী লরি বাংলাদেশে যায়। জানা গিয়েছে, প্রতিদিন এত সংখ্যক পণ্যবাহী ট্রাক ভারত থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে পণ্য নিয়ে গেলেও সম্প্রতি কোভিডের কারণ দর্শিয়ে বাংলাদেশের আমদানি রফতানি ব্যবসায়ীদের সংস্থা ‘বাংলা হিলি কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’ আমদানিকৃত পণ্য বোঝাই ট্রাকের সংখ্যা কমাতে কমাতে পঞ্চাশে নামিয়ে এনেছে। এর ফলে সমস্যায় পড়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।

বর্তমানে বাংলাদেশের উদ্দেশে যাওয়া হাজারের বেশি ট্রাক ভারত সীমান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে। শুধু তাই নয়, এও জানা গিয়েছে যে, ভারত থেকে বাংলাদেশে যাওয়া পণ্যবোঝাই ট্রাক মালপত্র খালাস করে ভারতে ফিরতেও বেশ কিছুদিন সময় নিচ্ছে। ফলে ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে ভারতের ব্যবসায়ী এবং ট্রাক মালিকদের।

এরই মাঝে ভারত থেকে পণ্য নিয়ে যাওয়া পণ্যবাহী ট্রাকের মালিক ও খালাসিদের করোনা টিকা থাকতেই হবে জানাল বাংলাদেশ। সে দেশের ব্যবসায়ী মহলের দাবি, বাংলাদেশের সীমান্তে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি হচ্ছে। আর এতে ভারতীয় লরি চালক ও খালাসিদের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে।

এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের আমদানি রফতানি ব্যবসায়ীদের সংস্থা বাংলা হিলি কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন একক ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জানিয়ে দেয় ভারতের আমদানি রফতানি ব্যবসায়ীদের সংস্থা হিলি এক্সপোটার্স এন্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দিয়ে জানায় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে যাওয়া ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের চালক ও খালাসিদের কোভিড ভ্যাক্সিনেশন একশো শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সংস্থার কাছ থেকে এমন চিঠি পাওয়ার পরেই গত ৬-ই জুন সভা ডেকে আলোচনায় বসে ভারতের হিলি এক্সপোটার্স এন্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের সদস্য-ব্যবসায়ীরা। সেই সভার পর বাংলাদেশের হিলি কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, বর্তমানে দেশজুড়ে কোভিড টিকার অভাব থাকায় ৮ জুনের মধ্যে ভারতের লরি চালক ও খালাসিদের টিকাকরণ কার্যত অসম্ভব।

তাই ৯ জুন থেকে হিলি সীমান্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে হিলি এক্সপোটার্স এন্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। যদিও এনিয়ে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলের নামে মিথ্যা অপবাদ ও কুৎসা প্রচারের জন্য দুঃখিত’, মাইকিং করে ‘ভুল স্বীকার’ বিজেপি কর্মীদের! 

এবিষয়ে ভারতের আমদানি রফতানি ব্যবসায়ী অমিত আগরওয়াল বলেন, “আমাদের প্রায় এক হাজার গাড়ি এপারে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। কোনওদিন বলছে ৮০টি গাড়ি নেব, কোনও দিন বলছে ৫০টা। এরকম সিদ্ধান্তের জন্য গাড়ি মালিক থেকে ব্যবসায়ী সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।”