‘কাকতাড়ুয়া’ উকিলরা দিদিকে বুদ্ধি দিয়েছে, ‘ভিক্টোরিয়ার সামনের ঘোড়াগুলোও হাসছে’, সারদা-কাণ্ডে পাল্টা অধীর

ঋদ্ধীশ দত্ত |

Dec 06, 2020 | 6:10 PM

অধীরের স্পষ্ট দাবি, কাকতালীয়ভাবে আমার নাম আনা হয়েছে। রবিবার মুর্শিদাবাদ জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা বলেন, তৃণমূলের ‘কাকতাড়ুয়া’ উকিলরা দিদিকে এই বুদ্ধি দিয়েছে। 

‘কাকতাড়ুয়া’ উকিলরা দিদিকে বুদ্ধি দিয়েছে, ‘ভিক্টোরিয়ার সামনের ঘোড়াগুলোও হাসছে’, সারদা-কাণ্ডে পাল্টা অধীর
ফাইল চিত্র।

Follow Us

বহরমপুর: ২৪ ঘণ্টা আগেই বোমা ফাটিয়েছেন সারদা (Saradha Scam) মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ও চিটফান্ড সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তিনি দাবি করেছেন, বাম কংগ্রেস-সহ একাধিক দলের নেতারা তাঁর থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন। সুদীপ্ত সেনের এই চিঠির নেপথ্যে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ভূমিকাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন মুর্শিদাবাদের ‘রবিনহুড’ অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। অধীরের স্পষ্ট দাবি, কাকতালীয়ভাবে আমার নাম আনা হয়েছে। রবিবার মুর্শিদাবাদ জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা বলেন, তৃণমূলের ‘কাকতাড়ুয়া’ উকিলরা দিদিকে এই বুদ্ধি দিয়েছে।

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বসে প্রথমেই পাল্টা প্রশ্ন দেগে দেন অধীর। সাড়ে সাত বছর পর কেন? শুরুতেই জানতে চান তিনি। অধীরের কথায়, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আজকের নয়। সবকিছু ব্যর্থ হওয়ার পর নতুন একটা অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। সারদা। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে সংসদে বঞ্চিত মানুষদের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছি। সিবিআই তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছি। তদন্ত এখন হচ্ছে। সাড়ে সাত বছর পর যখন নির্বাচন সামনে, আর কোনও অভিযোগ তুললে মানুষ খাচ্ছে না, এখন নতুন কোনও অভিযোগ বাজারে খাওয়ানো যায় কিনা তার জন্যই তৃণমূলের এই চক্রান্ত ষড়যন্ত্র।‘

বহরমপুরের সাংসদের কটাক্ষ, তৃণমূল দলে কিছু কাকতাড়ুয়া উকিল আছে যাঁরা দিদির খুব ঘনিষ্ঠ। তাঁরাই বুদ্ধি দিয়েছে, এরকম একটা গেম খেললে অধীর চৌধুরীকে ফাঁসানো যেতে পারে। সেই মতো বিরোধীদের কলঙ্কিত করতে কংগ্রেস ও বাম নেতাদের ও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।‘ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরামর্শ দেওয়ার সুরে অধীর বলেছেন, ‘এসব কাকতাড়ুয়া উকিলের পাল্লায় পড়বেন না, আপনার বিপদ বাড়বে।‘

আরও পড়ুন: পা থেকে মাথা পর্যন্ত দুনীর্তিগ্রস্ত, তারাই বেশি চিৎকার করে, রাজীবকে তোপ অরূপের

সারদা-কর্তার এই অভিযোগকে হাস্যকর বলে আখ্যা দেন তিনি। পাশাপাশি জেল কর্তৃপক্ষকেও দায়ী করে বলেন, ‘যে কোনও বন্দি চিঠি দিলে সেটা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পৌঁছে দেওয়া জেল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। কিন্তু এই ক্ষেত্রে এই চিঠি সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হল। যাতে অভিযোগের একটা বাতাবরণ তৈরি করা যায়। ভোটের পর হলে তো সেটা কাজে দেবে না। তাই একটা হাস্যকর অভিযোগ তোলা হল। আমার ধারণা, ভিক্টোরিয়ার সামনে থাকা ঘোড়াগুলো এই খবরে হাসাহাসি করছে।‘

অন্যদিকে এদিন রাজ্য সরকার পুলিসি নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে বিমল গুরুংকে সভাস্থলে নিয়ে গিয়েছে। সেই প্রসঙ্গে অধীরকে বলতে শোনা যায়, পাহাড় যখন অশান্ত ছিল তখন মুখ্যমন্ত্রী গুরুংকে দেশবিরোধী আখ্যা দিয়েছিলেন। এখন ভোটে জেতার অপেক্ষায় আপনি গুরুংকে সঙ্গে নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য আল-কায়েদা, জইশ-ঈ-মহম্মদ এবং দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গেও আন্ডারস্ট্যান্ডিং করে নেবেন।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই আজ আমি এখানে, তৃণমূলকে জেতাব, গোর্খাল্যান্ডও হবে: গুরুং

অধীর চৌধুরীর পাশাপাশি তাঁর আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে। তিনি বলেন এমন কোনও প্রমাণই নেই যা দিয়ে অধীর চৌধুরীকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা যায়। ফলে সুদীপ্ত সেনের এই চিঠির দাবি পুরোপুরি ভিত্তিহীন।

Next Article