ইতিহাসে প্রথমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় উত্তরবঙ্গের দুই সাংসদ

TV9 Bangla Digital | Edited By: সৈকত দাস

Jul 07, 2021 | 9:40 PM

2 MP from North Bengal in the Union Cabinet: "ইতিহাসে এই প্রথম উত্তরবঙ্গ থেকে একসঙ্গে দু'জন সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য হলেন।''

ইতিহাসে প্রথমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় উত্তরবঙ্গের দুই সাংসদ
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

ডুয়ার্স: পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তুলে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলেছেল আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা (John Barla)। সেই বার্লার ডুয়ার্স অঞ্চল থেকে প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে নজির গড়লেন। ডুয়ার্স, সেটাও আবার চা বাগান এলাকার কোনও বাসিন্দা আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাই বার্লার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আনন্দে মেতে উঠেছে চা বাগানের বাসিন্দারা।

বুধবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ তথা জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের প্রত্যন্ত লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানের বাসিন্দা জন বার্লা। দীর্ঘদিন আদিবাসী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত তিনি। ধীরে ধীরে আদিবাসী আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেলিলেন। এরপর ২০১৯ লোকসভা ভোটে সাংসদ নির্বাচিত হন আলিপুরদুয়ার কেন্দ্র থেকে।

আর এদিন যখন তিনি মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিচ্ছিলেন, তখন প্রতিবেশী থেকে পরিবারের সদস্যদের চোখ স্থির টেলিভিশন সেটে। জন বার্লা শপথ নিতেই লক্ষ্মীপাড়া চা-বাগান জুড়ে শুরু হল আবির খেলা আর মিষ্টি বিতরণ। চা বাগানের কোনও নেতা এই প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ায় এটুকু সেলিব্রেশন তো হবেই, জানালেন স্থানীয়রা।

বার্লা ছাড়াও অবশ্য মোদীর মন্ত্রিসভায় বাংলা থেকে জায়গা পেয়েছেন আরও তিন সাংসদ। সুভাষ সরকার, নিশীথ প্রামাণিক ও শান্তনু ঠাকুর। এর মধ্যে নিশীথ কোচবিহার থেকে প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে নজির গড়লেন। তেমনি মোদী মন্ত্রিসভার কনিষ্ঠতম সদস্যও বটে।

উত্তরবঙ্গের আর এক সাংসদ তথা বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র রাজু বিস্তের কথায়, “ইতিহাসে এই প্রথম উত্তরবঙ্গ থেকে একসঙ্গে দু’জন সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য হলেন।”

চা বাগানের শ্রমিক সঙ্গীতা লোহার বলেন, চা বাগান থেকে কেউ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হবে, এটা আমরা আগে কখনও ভাবিইনি। আমাদের ঘরের মানুষ আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হলেন। আমরা সবাই খুশি। আমাদের বাগান শ্রমিকদের অনেক সমস্যা রয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির বিষয় রয়েছে সেগুলি হয়তো এবার পূরণ হবে।

তবে আলিপুরদুয়ারে সাংসদ জন বার্লার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়াকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক রাজেশ কুমার সিংয়ের কটাক্ষ, “মন্ত্রী হওয়া সোজা, তবে চা বাগান থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য হয়ে বন্ধ বাগানের খোলার ব্যাপারে এবং বাগান শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে কতটা কাজ করেন উনি সেটাই দেখার।”

সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা জয়েন্ট ফোরামের কনভেনার জিয়াউল আলম বলেন, “চা শ্রমিক আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই আমরা আশা করছি চা বাগানের যে সমস্যা, শ্রমিকদের সমস্যা এই সমস্ত নিয়ে তিনি পদক্ষেপ করবেন। সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হবেন। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের যে নীতি, সেটা চা-বাগান শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিকর, সেই নীতির পরিবর্তন হওয়া দরকার রয়েছে।”

আরও পড়ুন: মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মোদীর মন্ত্রিসভার কনিষ্ঠতম সদস্য হলেন নিশীথ প্রামাণিক 

বন্ধ চা-বাগান খোলা নিয়ে জন বার্লা কতটা কী করতে পারবেন সেটা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে সিপিএম নেতার মনে। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে বীরপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী এসে বন্ধ চা-বাগান খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তো সেগুলো খুলল না। তবে জন বার্লার জন্য শুভেচ্ছা রইল চা শ্রমিক থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ায় জন্য।

Next Article