আলিপুরদুয়ার : বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে প্রাথমিক ভাবে যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয়টি সামনে এলেও মূল কারণ খতিয়ে দেখতে তৎপর রেল। সোমবার দুর্ঘটনা স্থল পরিদর্শন করলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। এ দিন তদন্তের জন্য দোমহনিতে যান তিন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ। স্টেট ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবের ওই তিন আধিকারিক বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন এ দিন।
এ দিন তিন আধিকারিকের সঙ্গে ছিলেন জিআরপি আধিকারিকরা। জিআরপির রুজু করা মামলার ভিত্তিতেই এই তদন্ত চলছে। ইঞ্জিনের সঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত রেক ও লাইন খতিয়ে দেখেন তাঁরা। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ট্রাকশন মোটর খুলে যাওয়ার কারণেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু কী কারণে ওই মোটর খুলে গেল, তা খতিয়ে দেখবে ফরেন্সিক টিম।
এ দিকে, যেহেতু আপ লাইনে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাই, ওই লাইনের সব ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। রেল লাইনেল স্লিপারগুলি দ্রুততার সঙ্গে বদলানো হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে এরকম দুর্ঘটনা আর না ঘটে, সেটা মাথায় রেখেই স্লিপার বদলানো হচ্ছে।
গত ১৩ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার ময়নাগুড়িতে ওই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটে। ওইদিন বিকেলে লাইনচ্যুত হয় বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের প্রায় ১২ টি কামরা। একটি কামরার ওপর অপরটি উঠে যায়। ঘটনার পরই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছে তদন্ত। ঘটনার পরই জবানবন্দি দেন ট্রেনটির চালক প্রদীপকুমার।
ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত রেলের চালক প্রদীপ কুমারের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। উত্তম রায় নামে এক যাত্রী লিখিত অভিযোগের দায়ের করেছেন চালকের বিরুদ্ধে। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করেছে জিআরপি। সেই যাত্রী আবার পুলিশের বিরুদ্ধেও বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ট্রেন থেকে তাঁর ৭০ হাজার টাকা লোপাট হয়ে গিয়েছে।
চালক প্রদীপ কুমার জানিয়েছেন এই দিন বিকেল ৪টে বেজে ৫২-৫৩ মিনিট নাগাদ আচমকাই একটা ভীষণ ঝাঁকুনি অনুভব করেন তিনি। তারপরই এর্মাজেন্সি ব্রেক কষেন সঙ্গে সঙ্গে। এরপর তিনি দেখেন পিছনের ৬টি চাকা লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে। তিনি যেহেতু গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তাই মোটর খুলেছে কি না, তা তাঁর পক্ষে জানা সম্ভব ছিল না বলেই জানিয়েছেন চালক।