আলিপুরদুয়ার: বেশ কয়েকদিন ধরেই তার উপস্থিতি বুঝতে পারছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার পায়ের ছাপ দেখা যাচ্ছিল, শোনা যাচ্ছিল গলাও। কিন্তু তার দেখা মিলছিল না। সন্ধ্যা হলেও রীতিমতো ভয়ে গৃহবন্দি হচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাড়ার গলির মুখে যেতেও ভয় পাচ্ছিলেন। শনিবারই চা বাগানের মধ্যে এক মহিলার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতাবাঘটি। তারপর কয়েক মিনিটের অসম লড়াই। প্রাণে কোনওক্রমে বাঁচেন মহিলা। কিন্তু দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। মৃত্যুভয় তাড়া করে ফিরতে থাকে স্থানীয় বাসিন্দাদের। অবশেষে বনদফতর এন ডি ৩/৪ সেকশনে শ্রমিকদের আবেদনে সাড়া দিয়ে খাঁচা পাতে। রবিবার সকালেই খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ। বনদফতরের পাতা খাঁচায় ধরা পড়ে চিতাবাঘ। অন্যদিকে, বিন্নাগুড়ি সেনা ছাউনির ভেতরের খাঁচায় ধরা পড়েছে একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ। রবিবার সকালে ডুয়ার্সে ভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার দুটি চিতাবাঘ।
নাংডালা চা বাগান এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই চিতাবাঘের আতঙ্ক তাড়া করে ফিরছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছিলেন তাঁরা। মাঝেমধ্যেই বাড়ি থেকে পোষ্যের উধাও হওয়ার ঘটনাও তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক দানা বেঁধেছিল। কিন্তু চিতাবাঘটিকে তাঁরা দেখতে পাচ্ছিলেন না। খবর যান বনদফতরে। কিছুদিন আগে বনদফতরের তরফে চা বাগান এলাকায় একটি খাঁচা পাতা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, শনিবার ,অনেকটা রাত থেকেই তাঁরা হুঙ্কার শুনতে পাচ্ছিলেন। রবিবার সকালে তাঁরা চা বাগানের মধ্যে চিতাবাঘটিকে খাঁচাবন্দি অবস্থায় দেখতে পান তাঁরা। বনদফতরে খবর যায়। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, রেঞ্জার এখনও ঘটনাস্থলে পৌঁছননি। তিনি গেলে চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। পুরুষ না মহিলা চিতাবাঘ, সেটা জানা যাবে।
এক গ্রামবাসী বলেন. “খুবই ভয়ে ছিলাম আমরা। বেশ অনেকদিন ধরেই, সন্ধ্যার পর আর বার হতাম না। দেখা যাচ্ছিল না, কিন্তু বুঝতে পারছিলাম চিতাবাঘটি লোকালয়ের ধারেকাছেই রয়েছে। শনিবার আমাদের এখানকারই এক মহিলা আক্রান্ত হন। চিতাবাঘটি ধরা পড়ায় শান্তি পেলাম।” আক্রান্ত মহিলা বর্তমানে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল চিকিৎসাধীন। দলগাঁও রেঞ্জের রেঞ্জার অশেষ পাল বলেন, “ওই মহিলা চা শ্রমিকের যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করবে বনদফতর।”
এদিকে, রবিবার সকালে ডুয়ার্সের বিন্নাগুড়ি সেনা ছাউনির ভিতর থেকে একটি খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ উদ্ধার হয়। সেনাকর্মীরা যখন শরীরচর্চা করতে বের হন,তখন তাঁদের নজরে আসে চিতাবাঘটি খাঁচাবন্দি হয়েছে। সেনা ছাউনির তরফে এখনও পর্যন্ত বিষয়টি বনদফতরকে জানানো হয়নি বলে দাবি বন দফতরের।