বাঁকুড়া: আতঙ্কে রীতিমতো ঘুম উড়েছিল গ্রামবাসীর। সন্ধ্যা হলেই দরজা জানালা বন্ধ করে ঘরবন্দি তাঁরা। কিন্তু মৃত্যু যে একেবারের দোরগোড়াতেই। একেবারে দুয়ার ভেঙেই ভিতর ঢুকল বিপদ! বউ-বাচ্চা নিয়ে একেবারে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গৃহকর্তা। তাঁকে টেনে কোনও মতে ঘরে ঢুকিয়েছিলেন স্ত্রী, কিন্তু পাঁচ মিনিটে ঝটিকা সফরে সর্বস্ব ধ্বংস করে গেল তারা। ফসল তো নষ্ট হচ্ছিলই, এবার বসতবাড়িও দাঁতালের পায়ে পিষে নষ্ট হল। একই দিনে পৃথক দুটি লোকালয়ে হাতির হানার ঘটনা ঘটল। গতকাল রাতে বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের মুক্তাতোড় গ্রামে ঢুকে ঘর ভাঙল হাতি। অন্যদিকে গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের দান্দুল্যা গ্রামে হানা দিয়ে বিঘের পর বিঘে জমির ফসল নষ্ট করে হাতির পাল। দিনের পর দিন লোকালয়ে এভাবে হাতি ঢুকে পড়ায় চূড়ান্ত আতঙ্কে দিন কাটছে বাঁকুড়ার (Bankura) বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের।
স্থানীয় ও বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া, সোনামুখী ও গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলে এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মোট ৮৮ টি হাতি। এরমধ্যে প্রায় ৫৫ টি হাতি রয়েছে বড়জোড়া ও সাহারজোড়ার জঙ্গলে। সোমবার রাতে সেই হাতির দলের মধ্যে থেকে একটি হাতি খাবারের খোঁজে হাজির হয় মুক্তাতোড় গ্রামে। গ্রামে ঢুকে হাতিটি হানা দেয় স্থানীয় পারুল বাউরির বাড়িতে। বাড়িতে ঢুকে মাটির কাচা দেওয়াল ভেঙে বাড়িতে থাকা চার বস্তা ধান খেয়ে ছড়িয়ে নষ্ট করে হাতিটি। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান পরিবারের সদস্যরা।
অন্যদিকে দিন কয়েক আগে থেকে গঙ্গাজলঘাটির জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়ে থাকা পাঁচটি হাতির একটি দল সোমবার রাতে হানা দেয় জঙ্গল লাগোয়া দান্দুল্যা গ্রামে। সেখানে বিঘের পর বিঘে জমির ফসল নষ্ট করার পাশাপাশি নষ্ট করে ধানের গাদা।
লাগাতার এই হাতির হানায় এলাকায় যথেষ্ট আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসীদের এখন একটাই দাবি, জীবন জীবিকার স্বার্থে এলাকা থেকে হাতির দলকে তাড়ানো হোক। বাড়ির মালকিন পারুল বাউরি বলেন, ” ভোর চারটেয় ঢোকে। স্বামী সামনে পড়ে গিয়েছিল। বাচ্চা গুলো ঘরে ছিল। ওকে হাঁসুয়া দিয়ে ধরে টেনে ভিতরে ঢুকিয়েছি। সামনে চার বস্তা চাল ছিল। সেই বস্তাও নিয়ে গিয়েছে। সব কিছু তছনছ করে ভেঙেছে। পাঁচ সাত মিনিটের মধ্যেই সব শেষ। ”