বাঁকুড়া: সরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের ভর্তি নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা। ইংরেজি মাধ্যমের সরকারি স্কুলই নেই ছাত্রীদের। ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা।
শিক্ষা দফতরের টালবাহানায় এবার মাঝপথে পড়াশোনা বন্ধ হতে বসল বাঁকুড়ার তিনটি সরকারি ইংরাজী মাধ্যম প্রাথমিক স্কুল থেকে উত্তীর্ণ ৯৩ জন পড়ুয়ার। এদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন ছাত্র লটারির মাধ্যমে বাঁকুড়া জেলা স্কুলে সীমিত আসনে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। বাকিরা পঞ্চম শ্রেণিতে আদৌ ভর্তির সুযোগ পাবে কি না তা নিয়ে তৈরি হয়েছে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা। হাতে মাত্র আর দু’টি দিন। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। তার আগে এই অনিশ্চয়তার জন্য রাজ্য সরকারকে দুষে ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার ঘটা করে ২০১৯ সালে সারা রাজ্যেই ইংরেজি মাধ্যমের প্রাথমিক স্কুল খোলে। বাঁকুড়া জেলায় খোলা হয় এমনই তিনটি প্রাথমিক স্কুল। প্রথমে প্রি নার্সারি ও ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করা হয় পড়ুয়াদের। তারপর ধীরে ধীরে ক্লাসের সংখ্যা বাড়তে থাকে। নিখরচায় ইংরেজি মাধ্যমে পঠন পাঠনের সুযোগ মেলায় বহু নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের পড়ুয়ারা এই স্কুলগুলিতে ভর্তি হয়।
এবছরই প্রথম ওই স্কুলগুলি থেকে চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ হয়ে পড়ুয়ারা হাইস্কুলে ভর্তি হবে। ২০১৯ সালে রাজ্য সরকারের তরফে ঘোষণা ছিল ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলিতে যেমন যেমন ক্লাসের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটবে তেমন তেমন উচ্চ শিক্ষার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। কিন্তু সেই ঘোষণা ঘোষণাই থেকে গিয়েছে অভিযোগ। সরকারিভাবে ইংরেজি মাধ্যম হাইস্কুল বলতে এখন একমাত্র ভরসা বাঁকুড়া জেলা স্কুল। সেখানে যে সংখ্যক আসন রয়েছে তাতে তিনটি ইংরেজি প্রাথমিক স্কুল থেকে উত্তীর্ণদের সকলের ঠাঁই হবে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে বাঁকুড়া জেলায় সরকারি ইংরাজী মাধ্যম স্কুলগুলি থেকে চলতি বছরে ৯৩ জন পড়ুয়া উত্তীর্ণ হয়েছে। অন্যদিকে জেলা স্কুলের ইংরাজী মাধ্যম বিভাগে আসন সংখ্যা মাত্র চল্লিশ। তাছাড়া জেলা স্কুলে ছাত্রীদের পড়ার সুযোগ নেই। স্বাভাবিক ভাবেই নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর ঠিক আগে এখন দিশেহারা অবস্থা ওই স্কুলগুলি থেকে উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের অভিভাবকদের।
অভিভাবকদের দাবি, এমন অবস্থা তৈরি হতে পারে ভেবে অনেক আগে থেকেই তাঁরা জেলায় আরও বেশ কয়েকটি সরকারি হাইস্কুলে ইংরাজী মাধ্যম চালুর আবেদন জানিয়ে আসছেন। কিন্তু শিক্ষা দফতরের টালবাহানায় শিক্ষাবর্ষের শেষেও কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় দিশেহারা অভিভাবকরা।
বাঁকুড়ার স্কুল পরিদর্শক পীযুষ কান্তি বেরা জানিয়েছেন, অবশ্য জানিয়েছেন জেলায় বেশ কয়েকটি হাইস্কুলে ইংরাজী মাধ্যম চালুর জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে রাজ্যে। অনুমোদন এলেই সমস্যা মিটে যাবে।