বাঁকুড়া: এবার বাঁকুড়ার জোড়া খুনেও লাগল রাজনীতির রঙ। বাঁকুড়ার জোড়া খুনের পিছনে লুকিয়ে পুরসভার আবাস দুর্নীতি, দাবি তুলে বাঁকুড়ার মাচানতলায় বিক্ষোভ বিজেপির। দায় এড়াল পুরসভা। বাঁকুড়া শহরে বিক্ষোভ মিছিল করার পাশাপাশি বুধবার মাচানতলায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। বিজেপির দাবি, অপরের জমির একাংশের উপর বাড়ি তৈরির জন্য অভিযুক্তকে আবাস যোজনার সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিল বাঁকুড়া পুরসভা। আবাস যোজনায় তৈরি সেই বাড়িকে ঘিরেই শুরু হয় দুই প্রতিবেশীর বিবাদ। আর তারই জেরে এই খুন বলে অভিযোগ। বাঁকুড়া পুরসভা এই ঘটনার দায় এড়িয়েছে।
গত রবিবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ার নতুনচটি এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মথুরামোহন দত্ত ও তাঁর ছেলে শ্রীধর দত্তকে খুনের অভিযোগ ওঠে। সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে এই খুন বলে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় আহত হন মথুরামোহন দত্তর স্ত্রী মল্লিকা দত্ত। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত প্রতিবেশী পিন্টু রুইদাস, তাঁর স্ত্রী নমিতা রুইদাস ও দুই ছেলে মহেশ্বর ও বিশ্বেশ্বরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জোড়া খুনের এই ঘটনার পর থেকেই অভিযোগের আঙুল উঠতে থাকে বাঁকুড়া পুরসভার বিরুদ্ধে। শহরের বাসিন্দাদের একাংশ দাবি, সম্প্রতি বাঁকুড়া পুরসভা ‘হাউজ় ফর অল’ প্রকল্পে অভিযুক্তদের বাড়ি তৈরির টাকা পাইয়ে দিয়েছে । সেই টাকাতেই প্রতিবেশী মথুরামোহন দত্তর মালিকানাধীন জমির একাংশ দখল করে বাড়ি নির্মাণ করে অভিযুক্ত পিন্টু রুইদাস। সম্প্রতি মথুরামোহন দত্তর আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট পিন্টু রুইদাসের বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, আদালত বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়ার পর রাগে পিন্টু রুইদাস ও তার পরিবার প্রতিবেশী মথুরামোহন দত্ত ও তাঁর ছেলে শ্রীধর দত্তকে খুন করার পরিকল্পনা করে।
এবার সেই ইস্যুকে সামনে রেখে বুধবার রাস্তায় নামে বিজেপি। বিজেপির দাবি, অন্যের জমি দখল করে বাড়ি করার জন্য অভিযুক্ত পিন্টু রুইদাস ও তার পরিবারকে সরকারি প্রকল্পে টাকা পাইয়ে দিয়েছিল বাঁকুড়া পুরসভা। সেই বাড়ি তৈরি করাকে কেন্দ্র করে গন্ডগোলের জেরেই খুন হতে হয়েছে মথুরামোহন দত্ত ও তাঁর ছেলেকে। তাই এই জোড়া খুনের ঘটনার সমস্ত দায় বাঁকুড়া পুরসভার ।
বাঁকুড়া পুরসভা অবশ্য এই ঘটনায় নিজেদের দায় এড়িয়েছে। পুরসভার দাবি, প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান চালিয়েই আবাস প্রকল্প মঞ্জুর করা হয়েছিল। পরবর্তীতে যখন দেখা যায় অন্যের জমিতে ওই উপভোক্তা বাড়ি তৈরি করছেন, তখন প্রকল্পের বরাদ্দ টাকা পুরসভার তরফে আটকে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি এখন এই বিষয়টাকে নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করছে।