বাঁকুড়া: বিডিও ও আইসি-কে বিজেপির দালালি করা চলবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে এবার বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূলের খোদ ব্লক সভাপতি। আর প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে সেই হুঁশিয়ারির ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই সমালোচনায় সরব হয়েছে রাজনৈতিক মহল। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের অমরকাননে। আবাস যোজনায় শাসক দলের দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে বুধবার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। এই ডেপুটেশনে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারী বিডিও অফিসের মূল গেট খুলে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বিডিও অফিস চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গঙ্গাজলঘাটি বিডিও অফিস চত্বরে।
বুধবার বিজেপির সেই কর্মসূচির পর বৃহস্পতিবার স্থানীয় অমরকানন এলাকায় পাল্টা সভা করে তৃণমূল। এই পাল্টা সভা থেকে তৃণমূলের গঙ্গাজলঘাটি ১ নম্বর সাংগঠনিক ব্লকের সভাপতি হৃদয় মাধব দুবেকে স্থানীয় বিডিও ও আইসিকে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায়। ওই মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় হৃদয় মাধব দুবে বলেন, “বিডিও অফিসে ডেপুটেশন দিতে গেলে বিক্ষোভকারীরা বিডিও অফিসের বাইরে থাকেন। আর একটি প্রতিনিধি দল দফতরে ঢুকে ডেপুটেশন দেয়। কিন্তু বিজেপির ডেপুটেশনের সময় গেট খুলে সকলে কীভাবে বিডিও অফিসে ঢুকল, তার কৈফিয়ৎ আমাদের সামনে বিডিও ও আইসিকে দিতে হবে। বিডিও ও আইসি শুনে রাখুন বিজেপির দালালি করা চলবে না”।
এরপরই তৃণমূলের ওই ব্লক সভাপতিকে রীতিমতো হুমকির সুরে বলতে শোনা যায়, “আমরা রামকৃষ্ণ মিশন থেকে সমাজসেবা করতে এখানে আসিনি। আমরা রাজনৈতিক দল। রাজনীতির মাধ্যমে সমাজসেবা করি। এইভাবে বিজেপিকে সমর্থন করলে আমরা কিন্তু আপনাদের ছাড়ব না। আমরা বিডিও অফিস ও থানা ঘেরাও করব।”
তৃণমূল ব্লক সভাপতির এই বক্তব্য সামনে আসতেই সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিজেপি। বিজেপির দাবি, শান্তিপূর্ণ মিছিল করে বিডিও অফিসে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছিল। সেই মিছিল দেখে ভয় পেয়ে গিয়ে তৃণমূল নেতারা প্রলাপ বকছেন।
তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের দাবি, গণতান্ত্রিক প্রথা মেনে সব রাজনৈতিক দলই স্মারকলিপি দিতে পারে। কিন্তু সরকারি আধিকারিক ও মানুষকে সম্মান দিয়ে মন্তব্য করা উচিৎ।
বিজেপি নেতা বলেন, “যেভাবে তৃণমূল নেতা বিডিও ও আইসি-কে হুমকি দিচ্ছিলেন, তাতে মনে হচ্ছে, আগামী দিনে সব পঞ্চায়েতগুলিই আমাদের দখলে চলে আসবে।” প্রশাসনিক স্তরে অবশ্য এখনও এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।