বাঁকুড়া : একে তো জ্বালানি তেলের দাম হু হু করে বাড়ছে। তার উপর যদি রোদ্দুরের মধ্যে বাইক নিয়ে গিয়ে পেট্রোল পাম্পে কম তেল পান… মেজাজ হারানোটা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। এবার এমনই কাণ্ড দেখা গেল বাঁকুড়ার মাচানতলায়। পাম্প থেকে কম পরিমাণ তেল মিলছে, সেই ‘প্রমাণ’ পেতেই ক্ষোভ আছড়ে পড়ল পেট্রোল পাম্পে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সন্ধ্যায়। বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা এলাকায় একাধিক সংস্থার পেট্রোল পাম্প রয়েছে। অন্যান্য দিন গাড়ির ট্যাঙ্কে সরাসরি তেল নিলেও আজ একটি জলের বোতলে দু লিটার ডিজেল নেন স্থানীয় এক গাড়ি চালক। তখনই বেনিয়মের বিষয়টি তাঁর নজরে আসে। ওই গাড়ি চালকের দাবি, দুই লিটার তেলের কথা বলা হলেও ওই পাম্প থেকে তাঁকে কমপক্ষে ২০০ – ৩০০ মিলিলিটার কম তেল দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হতেই ওই এলাকার গাড়ি চালকরা পেট্রোল পাম্পটিতে গিয়ে হাজির হন এবং বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। প্রথমে পাম্পের কর্মীরা তেল দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিমাণে কারসাজির কথা স্বীকার না করলেও পরে এই ঘটনার জন্য পাম্পের যান্ত্রিক ত্রুটিকেই দায়ী করেন ওই পাম্পের কর্মীরা। বিক্ষোভকারী ক্রেতা রাজা অধুর্য জানিয়েছেন, “আমি একজনকে পাঠিয়েছিলাম ২ লিটার তেল নেওয়ার জন্য। একটি ২ লিটারের জলের বোতলে করে তেল আনতে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে অনেকটা খালি থেকে গিয়েছে। পেট্রোল পাম্পের থেকে প্রথমে বলছে বোতলটি ২ লিটারের থেকে বেশি পরিমাণের।” এই নিয়েই বচসা শুরু হয় উভয়পক্ষের।
পরে অবশ্য ওই ব্যক্তি ওই মেশিনটির বদলে অন্য মেশিন থেকে তেল নেন। সেখানে দেখা যায় বোতলটি ভরে গিয়েছে ২ লিটারে। এরপরই পেট্রোল পাম্পের কর্মীরা প্রথম মেশিনটি বন্ধ করে দেন। এদিকে ঘটনার পর বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে হয়ত এভাবেই চলছে। কারণ, পেট্রোল বা ডিজেল ট্যাঙ্কের ভিতরে নিয়ে নেওয়ার পর আর বিষয়টি বোঝা সম্ভব নয়।
যদিও ওই পেট্রোল পাম্পের এক কর্মী বলেন, “তেল তো কম দেইনি। মেশিনটায় হয়তো কোথাও লিকেজ রয়েছে। সেই কারণে ওটি বন্ধ রাখা হয়েছে। এবার আমরা ওই তেলের সংস্থাকে অভিযোগ জানাব। সংস্থার লোক এসে ওটি ঠিক করে দিয়ে গেলে, তারপর আবার মেশিনটি চালু করব।” তবে এমন ঘটনা যে প্রতিদিন হয়, এমন মানতে নারাজ ওই কর্মী। তাঁর বক্তব্য, “কোনওদিন হতে পারে না। আমাদের পাম্পে প্রতিদিন পাঁচ লিটার করে মাপা হয়, তারপর মেশিন স্টার্ট হয়।”