বাঁকুড়া : পুরভোটে তৃণমূলের থেকে টিকিট পাননি। তাই বাঁকুড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ি কাউন্সিলর অনন্যা রায় চক্রবর্তী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নির্দল হিসেবে ভোট ময়দানে নামার। দলের হুঁশিয়ারিকে একপ্রকার অগ্রাহ্য করেই নির্দল হিসেবে ভোট লড়েছিলেন। দলবিরোধী কাজের জন্য তাঁকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল। পুরভোটে ওই ওয়ার্ড থেকে তিনি তৃণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়াতে প্রার্থীকে হারিয়েছিলেন বটে, কিন্তু ঘাসফুলে আর সেই অর্থে ফিরতে পারেননি তিনি। তবে ২১ জুলাইয়ের সভা ঘিরে আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত ওই কাউন্সিলর।
২১ জুলাইয়ের সমাবেশে ভিড় জমানোতে যাতে কোনও খামতি না থাকে, তার জন্য জেলায় জেলায় কর্মসূচি চালাচ্ছে তৃণমূল শিবির। প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। চলছে প্রচার অভিযান। বাঁকুড়া পুর এলাকাতেও তৃণমূলের তরফে প্রচার চলছে। তবে এর পাশাপাশি আলাদাভাবে ২১ জুলাইয়ের জন্য প্রচারে নেমেছেন দল থেকে বহিষ্কৃত কাউন্সিলর অনন্যা রায় চক্রবর্তী। ২১ জুলাই হল তৃণমূলের শক্তি প্রদর্শনের দিন। আর এই শক্তি প্রদর্শন শুধু বিরোধী শিবিরকেই নয়, এর পাশাপাশি কোন ওয়ার্ড থেকে কোন ব্লক থেকে কোন নেতা কত বেশি ভিড় টানতে পারবেন, সেই নিয়েও জোর চর্চা চলছে তৃণমূলের অন্দরে। এবার কি তাহলে সেই ভিড় টানার প্রতিযোগিতায় গা ভাসাচ্ছেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত এই কাউন্সিলরও? ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে ভিড় টেনে কি আবার তৃণমূলের কাছাকাছি আসার চেষ্টা? দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরেও কেন ২১ জুলাই নিয়ে এত সক্রিয় তিনি?
নির্দল কাউন্সিলর অনন্যা রায় চক্রবর্তীর অবশ্য বক্তব্য, তাঁর কাছে ২১ জুলাই হল একটি আবেগের নাম। বলেন, “আমরা যে দিন থেকে এই কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছি, প্রতি বছর আমরা ধর্মতলা গিয়েছি। এই বছরও তার অন্যথা হবে না। ইতিমধ্যেই আমরা দুই বছর হারিয়ে ফেলেছি করোনার জন্য। এই বছর ধর্মতলায় সভা হবে এবং আমরা যাব না, এটা তো হতে পারে না। এটা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইকে ভালবেসে যাওয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি থাকে, তাহলে যে কেউ যেতে পারে।” যদিও নির্দল কাউন্সিলরের এই কাণ্ডকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না স্থানীয় তৃণমূল শিবির। তৃণমূল বাঁকুড়া শহর সভাপতি সিন্টু রজক বলেন, “১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর কোথায় কী বলেছেন আমি জানি না। আমাদের পথসভা চলছে। আমরা দেখে নেব বিষয়টি। এই ধরনের ঘটনা অভিপ্রেত নয়। তিনি দল করেছেন একসময়ে। কিন্তু তাঁকে দল বহিষ্কার করেছে। স্বভাবতই দল তাঁদের উপর নির্ভরশীল নয়। তবে কেউ যদি শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যায়, তাতে আমাদের আপত্তি নেই।”
অন্যদিকে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ শানিয়ে বলেছেন, “মূল উদ্দেশ্য শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো? নাকি তৃণমূলের মূল স্রোতে ফিরে এসে কাটমানির ভাগ বেশি পাওয়ার আশা? এখন ওই নির্দল কাউন্সিলর ফের তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন। এই ঘটনা তারই প্রতিফলন।”