বাঁকুড়া: হাওড়ার ডোমজুড় থেকে ফুঁসলিয়ে বাঁকুড়ায় নিয়ে যাওয়া কিশোরীর রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় এবার নাম জড়াল এক চিকিৎসকের। বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় নামের ওই হাতুড়ে চিকিৎসককে ইতিমধ্যেই বেআইনিভাবে গর্ভপাত করানোর অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিন ধৃতকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে পেশ করেছে ছাতনা থানার পুলিশ।
গত ১৫ নভেম্বর প্রেমিকের সঙ্গে দক্ষিনেশ্বরে পুজো দেওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয় হাওড়ার ডোমজুড় এলাকার ১৬ বছরের ওই কিশোরী। এরপর বিভিন্ন জায়গায় সন্ধান চালিয়েও তার খোঁজ পায়নি পরিবারের লোকজন। ১৬ নভেম্বর কিশোরীর প্রেমিক রাহুল বাউরি টেলিফোনে কিশোরীর গুরুতর অসুস্থতার খবর জানায় পরিবারকে। খবর শুনে ১৬ নভেম্বর রাতেই তড়িঘড়ি কিশোরীর পরিবারের লোকজন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে দেখেন কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের লোকজন।
কিশোরীকে ফুঁসলিয়ে ডোমজুড় থেকে বাঁকুড়ার ছাতনা থানার ধগড়া গ্রামে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কিশোরীকে খুন করেছে তার প্রেমিক, এই অভিযোগ তোলে কিশোরীর পরিবারের লোকজন। রাহুল বাউরি ও প্রেমিকের বাবা ধীরেন্দ্রনাথ বাউরির বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে কিশোরীর পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ১৯ নভেম্বর অভিযুক্ত প্রেমিক ও তাঁর বাবা ধীরেন্দ্রনাথকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ধৃত ২ জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে পুলিশের হাতে।
এরইমধ্যে আবার কিশোরীর ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টও হাতে আসে পুলিশের। তার সঙ্গে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্য মিলিয়ে কিশোরীর মৃত্যুর আসল রহস্যের পর্দা ফাঁস করে পুলিশ। জানা গিয়েছে মৃত কিশোরী অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়ায় গোপনে গর্ভপাত করানোর উদ্দেশ্যেই তাকে তার প্রেমিক ডোমজুড় থেকে বাঁকুড়ার ধগড়া গ্রামে নিয়ে আসে। এরপর রাহুল স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসকের সাহায্যে প্রেমিকার গর্ভপাত করায়। পুলিশ সূত্রে খবর, সেখানেই ঘটে বিপত্তি। গর্ভপাত করাতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় কিশোরীকে তড়িঘড়ি বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় ওই কিশোরীর। পুলিশ ইতিমধ্যেই বেআইনি ভাবে গর্ভপাত করানোর অভিযোগে বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় নামের হাতুড়ে চিকিৎসককে গ্রেফতার করার পাশাপাশি কিশোরীর চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃত হাতুড়ে চিকিৎসককে এদিন বাঁকুড়া জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে। তাঁকেও নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছে ছাতনা থানার পুলিশ।