Hospital: পূবদিকের নিরিবিলি ঘর, টিমটিম আলো, খড়ের গাদার বিছানা, বিলিতি মদ-চিপস আর… হাসপাতালের পিছনের ঘরেই মনোরঞ্জন! স্বাস্থ্যদফতর যা বলল, ভিড়মি খেতে হয়…

Hirak Mukherjee | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Nov 20, 2024 | 11:53 AM

Hospital: জরাজীর্ণ হলেও হাসপাতালের নিজস্ব বিশাল ভবন রয়েছে। আছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের বসবাসের জন্য বেশ কিছু কোয়ার্টার। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্পও রূপায়িত হয়েছে। এলাকার ১০ -১২ টি গ্রামে রোগীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়।

Hospital: পূবদিকের নিরিবিলি ঘর, টিমটিম আলো, খড়ের গাদার বিছানা, বিলিতি মদ-চিপস আর... হাসপাতালের পিছনের ঘরেই মনোরঞ্জন! স্বাস্থ্যদফতর যা বলল, ভিড়মি খেতে হয়...
বাঁকুড়ায় হাসপাতালের চরম অব্যবস্থা!
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

বাঁকুড়া: বাংলা মদের বোতলের সংখ্যাই বেশি, কয়েকটা বিলিতিও রয়েছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্লাস্টিকের গ্লাস, তাতে তলানিতে রয়ে গিয়েছে মদও! সঙ্গে চিপসের প্যাকেট, বাদাম। পাশেই আবার খড়ের গাদা। স্যাঁতস্যাতে অন্ধাকর ঘর। সে পথে লোকের যাতায়াত কম। স্বাভাবিকভাবেই ‘কুকর্মে’র নিরাপদ ঠিকানা। সেই ঘরের বাইরে পা রাখলে আবার অন্য দৃশ্য। চড়ে বেড়াচ্ছে গরু, ছাগল! মুরগি খুটে খাচ্ছে দানা। গ্রামের এক কোণে এই ভবন আদতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। বাঁকুড়ার গুন্নাথ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকলে ভিড়মি খেতে হয় কী!

জরাজীর্ণ হলেও হাসপাতালের নিজস্ব বিশাল ভবন রয়েছে। আছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের বসবাসের জন্য বেশ কিছু কোয়ার্টার। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্পও রূপায়িত হয়েছে। এলাকার ১০ -১২ টি গ্রামে রোগীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। কিন্তু সেই হাসপাতালে নেই চিকিৎসকই। ফলে হাসপাতাল পরিণত হয়েছে এলাকার মদ্যপ ও সমাজবিরোধীদের আখড়ায়। যেখানে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বসবাস করার কথা সেই কোয়ার্টারগুলি এখন হয় গরুর গোয়াল না হয় স্থানীয় ফসল রাখার গুদামে পরিণত হয়েছে । বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের গুন্নাথ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এমন ছবি উঠে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের গুন্নাথ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একসময় বেশ নামডাক ছিল। এলাকার মানুষের চাহিদা থাকায় ধীরে ধীরে আউটডোর পরিষেবার পাশাপাশি শুরু হয়েছিল ইনডোর পরিষেবাও। স্বল্প সংখ্যক বেড যুক্ত সেই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ছোটখাটো অস্ত্রোপচারও হত। হাসপাতাল চত্বরেই থাকা বেশ কয়েকটি কোয়ার্টারে বসবাস করতেন চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীরা।

আশপাশের দশ বারোটি গ্রামের মানুষের চিকিৎসার জন্য অন্যতম ভরসাস্থল হয়ে উঠেছিল এই হাসপাতাল। কিন্তু সে সবই এখন অতীত। মাত্র এক দশকেই সেই হাসপাতাল এখন কার্যত ভূতুড়ে পোড়ো বাড়ি। হাসপাতালে কোনও চিকিৎসক না থাকায় ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবাটুকু পেতেও এখন গ্রামগুলির মানুষকে ছুটতে হয় ১২ কিলোমিটার দূরে থাকা ইন্দপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। হাসপাতালে মাঝেমধ্যে এক ফার্মাসিস্ট ও স্বাস্থ্যকর্মীকে আউটডোর খুলে বসতে দেখা গেলেও প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও তাঁরা দিতে পারেন না বলে অভিযোগ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হাসপাতালের কোয়ার্টারগুলির জানালা দরজা সবই চুরি হয়ে গেছে।

বিষ্ণুপুরের সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ৩ সজল বিশ্বাস জানান, ওই হাসপাতালে একজন চিকিৎসক আগে মোতায়েন ছিলেন। তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য চলে যেতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দ্রুত সেখানে অপর একজন চিকিৎসককে পাঠানোর চেষ্টা চলছে। হাসপাতালটির এমন হাল নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। বাঁকুড়ার সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি দেবাশিস দত্ত জানান,  শুধু গুন্নাথ হাসপাতালেই নয়, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্যতম মেরুদণ্ড গ্রামীণ প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থাই কমবেশি এই রকমই। আর এই ঘটনার জন্য তাঁরা কাঠগোড়ায় তুলেছে রাজ্য সরকারকে। রাজ্যের শাসক দল গুন্নাথ হাসপাতালের দুরবস্থাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করেছে।

Next Article