বাঁকুড়া: পুজোর দিনগুলি জেলেই কাটাতে হবে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী (Shyamaprasad Mukherjee) ।বিষ্ণুপুর পৌরসভার টেন্ডার দুর্নীতি কাণ্ডে (Bishnupur Tender Case) ধৃত শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে বৃহস্পতিবার পুনরায় ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালত। তাই দুর্গাপুজোয় জেলে বন্দি অবস্থাতেই কাটাতে হবে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে। একই সঙ্গে এদিন শ্যামাপ্রসাদের প্রাক্তন হিসাব রক্ষক রামশঙ্কর মহান্তি এবং পুরসভার প্রাক্তন ওভারসিয়ার দিলীপ গড়াইকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
অন্যদিকে পুরসভার হাইমাস্ট লাইট দুর্নীতির মামলায় তোলাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া শ্যামা ঘনিষ্ঠ নেতা উজ্জ্বল নন্দীর এদিন জামিন মঞ্জুর করেছেন বিচারক। বৃহস্পতিবার আদালত থেকে বেরিয়ে সরকার পক্ষের আইনজীবী ইন্দ্র নারায়ণ বিশ্বাস জানান, টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগের ঘটনায় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সহ রামশংকর মহান্তি ও দিলীপ গড়াইকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। পাশাপাশি ধৃত উজ্জ্বল নন্দীর জামিনও মঞ্জুর হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, বিষ্ণুপুর পুরসভায় ১০ কোটি টাকা টেন্ডার দুর্নীতি কাণ্ডে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় চলতি বছরের ২২ আগস্ট গ্রেফতার হন। ফ্রিজ হয় তাঁর সম্পত্তি। পরে শ্যামাপ্রসাদের প্রাক্তন হিসাব রক্ষক রামশংকর মহান্তি এবং পুরসভার প্রাক্তন ওভারসিয়ার দিলীপ গড়াইকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এই ঘটনার তদন্তে নেমে তিন কেজি সোনা সোনা সহ বিভিন্ন ব্যাংক ও পোস্ট অফিসে আয় বহির্ভূত কোটি কোটি টাকার হদিশ পাওয়া যায়। এছাড়াও নামে ও বেনামে বহু জমির খোঁজ মেলে।এছাড়াও পুরসভায় হাইমাস্ট লাইট দুর্নীতির ঘটনায় এক ঠিকাদারের অভিযোগের ভিত্তিতে একসময়ের শ্যাম ঘনিষ্ঠ উজ্জ্বল নন্দীকেও গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন: Crime: ‘দিনের পর দিন আমার সঙ্গে…’ সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেরই ভিডিয়ো দেখে থানায় নালিশ যুবতীর!
প্রায় তিন দশক ধরে মল্লগড় বিষ্ণুপুরে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন ‘মুকুটহীন সম্রাট’ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। স্থানীয়দের কাছে তিনি ‘কত্তাবাবু’ নামেই পরিচিত। গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে বিষ্ণুপুর পুরসভা চলত তাঁরই অঙ্গুলিহেলনে। ২০০৯ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন শ্য়ামাপ্রসাদ। ২০১১ সালে বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী হলে শ্যামাপ্রসাদের ক্ষমতা আরও বাড়ে। কিছুদিনের জন্য জেলাসভাপতির দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। ২০১৬ সাল থেকে রাজ্যের বস্ত্র ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। মন্ত্রী থাকতেই চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারিতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে নোটিস দিয়েছিল ইডি। তারপরেই ধীরে ধীরে ‘নিজ গড়ে’ ক্ষমতা হারাতে শুরু করেন ‘কত্তাবাবু’। সম্প্রতি তাঁকে ১০ কোটি টাকার বিষ্ণুপুর টেণ্ডার দুর্নীতিতে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: WB Bypoll 2021: পুজো শেষেই রাজ্যে আরও উপনির্বাচন, মনোনয়নপত্র জমা খড়দহের তৃণমূল প্রার্থী শোভনদেবের