বাঁকুড়া: কাজ করতে গিয়ে সিকিমের লাচেনে আটকে বাড়ির ছেলে। তিনি পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। সেদিনের বিপর্যয়ের পর থেকে টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগও করতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় দিন কাটছে বাঁকুড়ার দ্বারিকা গ্রামের শেখ সুমনের পরিবারের।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ব্লকের দ্বারিকা গ্রামের সুমন ছোট থেকেই মেধাবী। সুমনের পরিবারের এর আগেও বড় বড় বিপর্যয় নেমে এসেছে। সুমন যখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত, তখন খুব অল্প দিনের ব্যবধানেই বাবা ও মায়ের মৃত্যু হয়। জ্যেঠুর পরিবারে বড় হয়ে ওঠে সে। সুমন উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর বিষ্ণুপুরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে সিভিল বিভাগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। পাশ করার অল্পদিনের মধ্যে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি পান। প্রথম পোস্টিং হয় ওড়িশায়। সেখান থেকে মাস পাঁচেক আগে সিকিমের লাচেনে একটি বেসরকারি নির্মাণ সংস্থার কাজে যোগ দেন।
প্রায় প্রতিদিনই পরিবারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলতেন সুমন। কথা ছিল ডিসেম্বরেই তিনি গ্রামে ফিরবেন। শনিবার সন্ধ্যায় টেলিফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সময় সুমন জানান সিকিমে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির জেরে আপাতত সংস্থার কাজ বন্ধ থাকায় বাড়িতেই থাকতে হচ্ছে তাঁকে। সেই শেষ কথা। তারপর থেকে আর যোগাযোগ হয়নি সুমনের সঙ্গে। টেলিফোন বন্ধ রয়েছে তখন থেকেই। বিষ্ণুপুর থানা থেকে শুরু করে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও আর যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
ফলে একরাশ উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় আপাতত সুমনের একটি ফোনের অপেক্ষায় সুমনের পরিবার। পরিবারের এক সদস্য বলেন, “ফোন বাজলেই মনে হচ্ছে, ওখান থেকে ফোন এল না তো! সুমনকে ফোন করে যাচ্ছি সমানে, নট রিচেবল। এই ডিসেম্বরেই ফেরার কথা ছিল। ছেলেটা ছোটবেলা থেকেই পরিশ্রমী।”