বাঁকুড়া: প্রায় আট বছর আগের ঘটনা। পারিবারিক বিবাদের জেরে দেওরের স্ত্রী ও তাঁর দেড় বছরের শিশুকন্যাকে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ ওঠে। নাম জড়ায় ভাশুর ও জায়ের। অবশেষে দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে গ্রেফতার করা হল বাঁকুড়ার জয়পুর থানা এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়কে। যদিও তাঁর স্ত্রী অনিতা চট্টোপাধ্যায় এখনও ফেরার। ধৃতের ভাই সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর স্ত্রী মমতা ও কন্যা অনন্যাকেই খুনের অভিযোগ ওঠে প্রদীপ ও অনিতার বিরুদ্ধে। জয়পুর থানায় সন্দীপ অভিযোগ জানালেও এতদিন প্রদীপদের খোঁজ পাচ্ছিল না পুলিশ। অবশেষে ভিন জেলায় মিলল সন্ধান। পুলিশ সূত্রে খবর, নাম বদল করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরে থাকছিলেন প্রদীপ। জয়পুর থানার কাছে গোপন সূত্রে সে খবর আসে। এরপরই মথুরাপুরের পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় প্রদীপকে। যদিও অনিতাকে পাওয়া যায়নি।
২০১৪ সালের ঘটনা। বাঁকুড়ার জয়পুর থানার গেলিয়া গ্রামের বাসিন্দা সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী মমতা চট্টোপাধ্যায় ও তাঁদের দেড় বছরের শিশু কন্যা অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, খুন করে বাড়ির মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়েছিল দেহ দু’টি। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমেই পুলিশের স্ক্যানারে উঠে আসে পারিবারিক বিবাদের বিষয়টি। সন্দীপ তাঁর দাদা, বৌদির নামে অভিযোগও জানান। তবে সে সময় বিপদ বুঝে পালিয়ে যান অভিযুক্তরা।
তবে পুলিশ গোপনে খোঁজখবর চালাচ্ছিল। সম্প্রতি বিশেষ সূত্রে থানায় খবর আসে, প্রদীপ নাম বদল করে মথুরাপুরে রাজমিস্ত্রীর কাজ করছেন। এরপরই মথুরাপুর থানার সাহায্যে জয়পুর থানার পুলিশ প্রদীপকে গ্রেফতার করে। এতগুলো বছর চোখের পাতা এক করতে পারিনি, বলছেন সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়। দাদার কঠিনতম শাস্তি চান তিনি। জানান, সেই সময় মা, বাবা, পরিবারের সকলে একইসঙ্গে থাকতেন। সংসারে অভাব থাকলেও কোনও মনোমালিন্য ছিল না। হঠাৎই দাদার সঙ্গে বিবাদ, তারপরই এমন ঘটনা। এখনও সেই দিনটার কথা ভাবলে শিউরে ওঠেন অভিযোগকারী।
সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি পুলিশকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আমার বুক ভেঙে গিয়েছিল। আজ আমার বুকের জ্বালা কিছুটা যেন কমল। আমি আদালতের কাছেও প্রার্থনা করব দোষীর যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছিল তারা সম্পর্কে আমার দাদা বৌদি হয়। দাদা ধরা পড়লেও বৌদি ধরা পড়েনি। এখনও ফেরার। পুলিশের প্রতি আমার চরম আস্থা ছিল। আমি সত্যি পুলিশের কাছে কৃতজ্ঞ।”