করোনার বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে খোদ মারণভাইরাসের কবলে চিকিৎসক, অবশেষে যুদ্ধাবসান!
চিকিৎসকের এই অকালমৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। হাসপাতালে ড. মুখোপাধ্য়ায়ের বেশ কিছু সহকর্মীর দাবি, ফ্রন্ট লাইন ওয়ারিয়র বা সামনের সারির কোভিডযোদ্ধা হিসেবে বহু আগেই ওই চিকিৎসকের টিকাকরণ হওয়ার কথা ছিল
পুরুলিয়া: করোনার বিরুদ্ধে বরাবর সামনের সারিতে লড়েছেন তিনি। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে মাতৃসদনের চিকিৎসকও ছিলেন। তিনি ড. প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্য়ায়। রোগীদের ‘মসীহা’ বলেই পরিচিত ছিলেন ড. মুখোপাধ্যায়। করোনার (Corona) কামড়ে অবশেষে ইতি যুদ্ধের। মারা গেলেন বছর বাহান্নর চিকিৎসক।
পুরুলিয়া জেলা সদর হাসপাতালের তরফে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে ড. প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্য়ায় হাসপাতালেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। কমে যায় অক্সিজেনের মাত্রা। তাঁর অবস্থার দ্রুত অবনতি দেখে আইসিউতে ভর্তি করা হয়। করোনা পরীক্ষা করা হলে তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ (COVID19 Positive) আসে। বুধবার দুপুরে মারা যান ড. মুখোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্য়ুতে শোকস্তব্ধ সদর হাসপাতাল। এদিনই, ড. মুখোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন তাঁর সহকর্মীরা। করোনায় মৃত্য়ু হওয়ার দরুন মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃতদেহ ডিস্পোজ করে শ্মাশানে দাহ করা হয়। পুরুলিয়ায় একাই থাকতেন ড. মুখোপাধ্যায়। মৃত্য়ুর পর খবর দেওয়া হয়েছে তাঁর পরিবারকে এমনটাই জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিন, চিকিৎসককে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়ার জেলা শাসক রাহুল মজুমদার এবং পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান।
চিকিৎসকের এই অকালমৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। হাসপাতালে ড. মুখোপাধ্য়ায়ের বেশ কিছু সহকর্মীর দাবি, ফ্রন্ট লাইন ওয়ারিয়র বা সামনের সারির কোভিডযোদ্ধা হিসেবে বহু আগেই ওই চিকিৎসকের টিকাকরণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোনওভাবে তাঁর টিকাকরণ হয়নি। টিকা (Vaccination) নিলে অন্তত মৃত্য়ু প্রতিহত করা যেত বলেই মনে করছেন মৃত চিকিৎসকের ঘনিষ্ঠ মহল। যদিও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, রাজ্যে করোনা সংক্রমণের দৈনিক সংখ্যা এবার পার করল ২০ হাজারের গণ্ডি। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ২০ হাজার ১৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। পজিটিভিটি রেট ৩০ শতাংশ। করোনামুক্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৯৯৪ জন।