Bhoot Chaturdashi: আজ রাতে মুক্তি পায় ভূতেরা, শ্মশানে তিন প্রহরে খায় চাল-পাঁঠার মাংস-কারণবারি
Asansol: বনমালী ভট্টাচার্য আজ আর বেঁচে নেই। তবে এলাকার লোকজন বলেন, শ্মশানের বটগাছে এখনও বাঁধা আছে ভূতেরা। ভূত চতুর্দশীর রাতে তাদের কিছু সময়ের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। সেই সময় চলে পুজোআর্চা। এরপর আবার গাছে বন্দি। বনমালী ভট্টাচার্যের নাতি তারক ভট্টাচার্য বলেন, "ভূত সারা বছর বাঁধা থাকে। আজ ছেড়ে দিতে হয়। আজকের দিনটা খুব ভয়াবহ দিন। আজকের দিনে ভূত ঘুরে বেড়ায়।"
আসানসোল: কালীপুজোর আগে ভূত চতুর্দশীর রাতে বিশেষ পুজো চলে আসানসোলের মহিশিলা-১ কলোনির পিয়ালবেড়া শ্মশানে। রাতভর বিশেষ ভোগ নিবেদন করা হয় এই পুজোয়। ভূত পিশাচদের দেওয়া হয় সেই ভোগ। যাঁরা এই পুজো করেন, তাঁদের দাবি, রাত ৩টের পর এলে দেখা যাবে কোনও ভোগ সেখানে পড়ে নেই। শঙ্করী, শিবানী নামে দুই পিশাচ ও ভূত প্রেতরাই আনন্দ করে তা খায়। প্রায় ৭৫ বছর হয়ে গেল এভাবেই ভূত চতুর্দশীর পুজো হয় এই শ্মশানে।
এখানকার লোকজন বলেন, শ্মশানের বটগাছে ভূতরা বাঁধা থাকে সারা বছর। এই একটি রাতে তাদের মুক্ত করে দেওয়া হয়। তার জন্যই এই পুজো। বামাক্ষ্যাপার অন্যতম প্রধান শিষ্য বনমালী ভট্টাচার্য। তাঁরই ছেলে বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যের কথায়, “ইতিহাস অনেক। পঞ্চমুণ্ডি আসনে আমার বাবা বসে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। সেই থেকে মায়ের নামে দীক্ষা নেওয়া। তারপর তারা মায়ের মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হল। সেই থেকে ভূত চতুর্দশীর শিবা ভোগ দেওয়া হয়।”
তাঁর সংযোজন, “ভূত চতুর্দশীতে শিবা ভোগ না দিলে মায়ের পুজো হয় না। শিবা ভোগ থাকবে শঙ্করী, শিবানী, ভূত প্রেতদের। আনন্দে করে সব এসে ভোগ খায়। তিন প্রহরে ভোগ দেওয়া হয়। রাত ১০টা, রাত ১২টা, রাত ৩টেয় ভোগ দেওয়া হয়। ৩টেয় এসে দেখবেন সব ভোগ পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। গোবিন্দ ভোগ চালে পাঁঠার মাংস, কারণবারি, হলুদ থাকে সেই ভোগে। ওরা আনন্দ করে খায়।”
বনমালী ভট্টাচার্য আজ আর বেঁচে নেই। তবে এলাকার লোকজন বলেন, শ্মশানের বটগাছে এখনও বাঁধা আছে ভূতেরা। ভূত চতুর্দশীর রাতে তাদের কিছু সময়ের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। সেই সময় চলে পুজোআর্চা। এরপর আবার গাছে বন্দি।
আসানসোলের রায় জমিদাররা তান্ত্রিক বনমালী ভট্টাচার্যকে জমি দিয়েছিলেন বলে কথিত আছে। নদিয়ার বনমালী ভট্টাচার্য ৭ বছর বয়স থেকেই বামাক্ষ্যাপার শিষ্য। পিয়ালবেড়া শ্মশান সে সময় জঙ্গলে ভরা। গা ছমছম করত সবসময়। দুপুরের পর কারও বাড়িতে কেউ মারা গেলে দাহ করার জন্য পরদিন ভোর অবধি সবাই অপেক্ষা করে থাকতেন। সেই নির্জন শ্মশানেই বনমালী ভট্টাচার্যের সাধনা শুরু।
বনমালী ভট্টাচার্যের নাতি তারক ভট্টাচার্য বলেন, “ভূত সারা বছর বাঁধা থাকে। আজ ছেড়ে দিতে হয়। আজকের দিনটা খুব ভয়াবহ দিন। আজকের দিনে ভূত ঘুরে বেড়ায়। শিবানী আর শঙ্করীর ডাক পড়ে এদিন। এরা বড় ভূত। ওদের ডাকা হয় এদিন।” শনিবারও তার অন্যথা হচ্ছে না।