শিলিগুড়ি: জনসমক্ষে ভরা শিলিগুড়িতে সভা করলেন। তারপর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখিও হলেন ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সুপ্রিমো বিমল গুরুং (Bimal Gurung)। সেখানে বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে একের পর এক বোমা ফাটালেন তিনি। বিমলের কড়া হুঁশিয়ারি, ‘বিজেপি এবার থেকে গোর্খাদের একটাও ভোট পাবে না। টানা ১৫ বছর আমরা বিজেপিকে সাংসদ দিয়ে এসেছি। মোদী নিজেই বলেছিলেন, গোর্খাদের স্বপ্ন আমারও স্বপ্ন। সব সমস্যার সমাধান করব। কিন্তু এত বছর ধরে কিছুই হল না। তাহলে সমস্যার সমাধান কবে হবে? আর যদি সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে বিজেপিকে ভোট দিতে যাব কেন?’
গেরুয়া শিবির শুধুমাত্র ভোটের রাজনীতির জন্য এতদিন গোর্খাদের ব্যবহার করে এসেছে বলে বিস্ফোরক দাবি করেন গুরুং। তাঁর কথায়, “এখন থেকে ভোট চাওয়ার আগে মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের ভাবতে হবে। বিজেপি নিজের ম্যানিফেস্টোতে গোর্খাল্যান্ড (Gorkhaland) ইস্যুর সমাধান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তার কাজ এতদিনে কিছুই হয়নি। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যা বলেন তাই করেন। তবে মাঝে সামান্য কিছু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। কিন্তু এখন একসঙ্গে কাজ করতে চান।”
কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস তো পৃথক গোর্খাল্যান্ডের বিরোধী, তার বেলা?
বিমলের সাফ জবাব, ‘বিগত তিন বছরের বিজেপি বিন্দুমাত্র কোনও সাহায্য করেনি। দিদির কাছে আমার আবেদন, যাতে স্থায়ী কোনও রাজনৈতিক সমাধান করা যায় এই সমস্যার। এখন আমি দিদির সঙ্গে মিলে কাজ করতে চাই। একটা সুস্থ পরিবেশ তৈরি করে পরবর্তী সময়ে কীভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপ তৈরি করা যায় সেটা দেখতে হবে।‘ যদিও কী ধরনের স্থায়ী সমাধান তিনি চান সে বিষয়ে ব্যাখ্যা করেননি।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই আজ আমি এখানে, তৃণমূলকে জেতাব, গোর্খাল্যান্ডও হবে: গুরুং
গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের খারাপ ফলাফলের জন্য এদিন সরাসরি বিনয় তামাং ও অনিক থাপাদের দায়ী করেন বিমল। তাঁরা নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্রয় নিয়েছে বলে তাঁর দাবি। দৃপ্ত কণ্ঠে বিমলের পাল্টা চ্যালেঞ্জ, এখনই দার্জিলিং বা কার্শিয়াং-এ নির্বাচন করে দেখান। তৃণমূলকে জিতিয়ে দেব।
এদিন শিলিগুড়ির সভায় বক্তব্য রাখার সময় আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন এই মোর্চার নেতা। গলা ভারী হয়ে আসে তাঁর। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিমল জানান, গত তিন বছর কীভাবে কাটিয়েছি সেটা আমি জানি, আর আমার পরিবার জানে। মনে পড়লে কষ্ট হয় সেই কথাগুলো। তা বলতে গিয়েই একটু আবেগ তাড়িত হয়ে গিয়েছিলাম।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদ্রোহে অভিযুক্ত গুরুংকে এসকর্ট করল কেন পুলিস? প্রশ্ন বিরোধীদের