বীরভূম: বগটুইকাণ্ড (Bagtui Massacre) ঘিরে ক্রমেই চড়ছে পারদ। এই ঘটনায় প্রথম গ্রেফতারি রামপুরহাটের তৃণমূল ব্লক প্রেসিডেন্ট আনারুল হোসেন। তাঁকে গ্রেফতারের পর থেকেই বারবার উঠে এসেছে বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম। এবার সেই ঘটনায় নাম জড়াল রামপুরহাটের বিধায়ক তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই নাম উঠে এসেছে। প্রায় এক বছর আগে আনারুলকে নিয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন রামপুরহাটের বিধায়ক। আর তা লিখেছিলেন বীরভূমের জেলা সভাপতিকে। সেই চিঠিই আচমকা সামনে এল এবং সেই সময়, যখন এই ঘটনা ঘিরে ক্রমেই চাপ বাড়ছে অনুব্রত মণ্ডলের।
এই চিঠি বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে আসে। এদিনই আবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অনুব্রত মণ্ডল। সেখানে দাবি করেন, আগেই তিনি আনারুল হোসেনকে দলীয় পদ থেকে সরাতে বলেছিলেন। কিন্তু তা চিঠি দিয়ে আটকে দেন রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তবে কি আশিসকেই আনারুলের ‘বিগ বস’ বানানোর চেষ্টা চলছে? এভাবেই কি অনুব্রত নিজের দায় এড়াতে চাইছেন? একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, সত্যি যদি সে চেষ্টা হয়ও তা হলে তাতে খুব বেশি কি লাভ হবে অনুব্রত মণ্ডলের?
কীভাবে এই চিঠি আচমকা সামনে এল? কে তা সামনে আনল? এই চিঠি তো অনুব্রতকে লিখেছিলেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, তা হলে তা প্রকাশ্যে এল কি করে? আর কেনই বা অনুব্রত এদিন সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করলেন, “আমি গত বছরই ১০ জুন আনারুলকে সরাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই সময় আমাদের সিনিয়র নেতা আশিসদা দায়িত্ব নেন। সেই কারণেই রেখে দেওয়া হয়েছিল।” তা হলে কি কোনওভাবে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে ঠেলে দিচ্ছেন অনুব্রত?
টিভিনাইন বাংলাকে অনুব্রত মণ্ডল জানিয়েছেন, “আমি আশিসদাকে কোনওভাবেই দোষী সাব্যস্ত করছি না। আমারও প্রশ্ন চিঠিটা কীভাবে বের হল। তবে আশিসদা লিখে দিয়েছিলেন বলেই আমি আনারুলকে রেখেছিলাম। তবে আশিসদা ভাল লোক। কোনও সাথে পাছে থাকেন না। তবে সেদিন উনি লিখেছিলেন বলে আমি আর কিছু বলতে পারিনি।”
যদিও আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “অঞ্চল সভাপতিরাও চাইছিলেন এখনই যেন কোনও পরিবর্তন না হয়। এটা সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত ছিল। ওই ব্লক সভাপতিকে না বদলানোর একটা আবেদন ছিল। আর যা অভিযোগ তা তো এখন উঠছে। তখন তো এই অভিযোগের কথা আসেনি।”
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, “ওদের নিজেদের মধ্যে বখরা নিয়ে লেগে গিয়েছে। সেম সাইড হচ্ছে এখন।” অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “তৃণমূলের অন্দরে ক্রমবর্ধমান অন্তর্দ্বন্দ্বের এটা একটা প্রতিফলন মাত্র। সবে কলির সন্ধ্যা। একে অপরের বিরুদ্ধে আরও বড় বড় বোমা মারবে।” রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, আশিসের নাম ভাসিয়ে নিজের চাপ কমাতে পারবেন কি অনুব্রত?
আরও পড়ুন: CM Mamata Banerjee: ভিডিয়ো: হাসি মুখে ময়দার লেচিতে পাক, পাকদণ্ডীর ধারে দাঁড়িয়ে মোমো বানালেন মমতা
আরও পড়ুন: HS Examination 2022: উচ্চমাধ্যমিকের খাতায় যা লিখলে বাতিল হয়ে যাবে পরীক্ষা, জানিয়ে দিল সংসদ