বীরভূম: অনুব্রত- গড় কি আদতে বারুদের স্তূপের ওপর তৈরি? গত চার দিনে উদ্ধার হয়েছে চারশোরও বেশি বোমা। উদ্ধার হয়েছে ৩০ কেজি বোমা তৈরির মশলা। বাড়ি-বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে তাজা বোমা। আর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরই শাসকশিবিরকে বিঁধছে বিরোধীরা। শ’য়ে শ’য়ে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। অভিযোগ, বীরভূম জেলায় বাড়িতে বাড়িতে বোমা তৈরি হয়। সব জানে পুলিশ। তাহলে এতদিন কেন তল্লাশি নয়? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরই শুরু তৎপরতা। তবে কি এতদিন এই নির্দেশেরই অপেক্ষা করছিল পুলিশ? সে প্রশ্নও তুলছেন বিরোধীরা। তৃণমূলের কিন্তু এসবের পরেও সাফ জবাব, কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কি এরকম নির্দেশ দেন? মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন কড়া ব্যবস্থা নিতে, তাই হয়েছে। রয়েছে আরও একটি প্রশ্ন, বোমা তো উদ্ধার হচ্ছে এত, কিন্তু গ্রেফতার হচ্ছে কই? যাদের বাড়ি থেকে বোমা উদ্ধার হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করছে প্রশাসন?
বীরভূমের তৃণমূল জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নের বার্তা নিয়ে চলেছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, অসামাজিক লোক খুঁজে বার করে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার। এরকম মুখ্যমন্ত্রী কোথাও আছেন, যিনি বলেন কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার? তিনি বলেছেন, তাই পুলিশ পদক্ষেপ করছে।”
আর এই বিষয়টিকেই কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। বীরভূমের বিজেপি জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “এগুলো সবই আই ওয়াশ। বীরভূম বারুদের স্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে। প্রত্যেক পাড়ায় সব বাড়িতে বোমা পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, যাদের বাড়িতে বোমা পাওয়া যাচ্ছে, তাদের কি আদৌ গ্রেফতার করা হচ্ছে? আদৌ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি? সেই তথ্য পুলিশ দিচ্ছে না।”
একনজরে গত চার দিনে বীরভূমের বোমা উদ্ধারের পরিসংখ্যান
শুক্রবার বীরভূমের মাড়গ্রামে উদ্ধার হয় ৬০ টি তাজা বোমা, তারপর শনিবারও মাড়গ্রামেই উদ্ধার হয় আরও ১০০ টি বোমা। রবিবার দুবরাজপুরে উদ্ধার হয় ৩০টি বোমা। পাশাপাশি আরও তিন কেজি বারুদ উদ্ধার হয় সেখান থেকে। অন্যদিকে দুটি ড্রাম ভর্তি প্রায় ৪০ টি বোমা উদ্ধার হয় মল্লারপুরে। সোমবারও বীরভূমে সেই বোমা উদ্ধার অব্যহত ছিল। বীরভূমের দুবরাজপুর ও লাভপুরে উদ্ধার হয়েছে মোট ১৪০ টি বোমা।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই মাড়গ্রাম থেকে উদ্ধার হয় ২০০ তাজা বোমা। মুখ্যমন্ত্রী বগটুই গিয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, জেলাতে প্রচুর অস্ত্র লুকিয়ে রাখা রয়েছে। রয়েছে বোমাও। সব খুঁজে বার করতে হবে। তারপরই শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। প্রশ্ন হচ্ছে, কোথায় কত বোমা লুকিয়ে, তা কি আগেই জানত পুলিশ? সব জেনেও চুপ ছিল?
রাজ্যের অস্ত্র ভাণ্ডার নিয়ে মুখ্য়মন্ত্রীকে বিঁধেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, “ভাঙড়ের সময়ে বলেছিলেন না, ওরা হচ্ছে আমাদের দলের সম্পদ। যে সকাল পর্যন্ত দলের সম্পদ ছিল, সে আপদ হল কী করে? বাংলায় কীভাবে এত অস্ত্র আসছে? তৃণমূল নেতা খুন হলেই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা। ”
আরও পড়ুন: আগুন নেভাতে কেউ বাধা দিয়েছিলেন সেই রাতে? এবার সিবিআই-এর মুখোমুখি দমকলকর্মীরা