বীরভূম: বাবার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর কাকাকে বিয়ে করেছিলেন মা। নিজের কাকাই হয়েছিলেন সৎ বাবা। কিন্তু সম্পর্কের সমীকরণের মতো ব্যক্তিগত সম্পর্কটাও জটিল হয়ে গিয়েছিল। পরে কাকার সঙ্গে মায়ের সেই সম্পর্কও ভেঙে যায়। মাকে নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করেছিল বছর বারোর ছেলেটা। কিন্তু তাতে কাকার রাগ আরও বাড়ে। আর তাতেই কিশোরের মর্মান্তিক পরিণতি। বারো বছরের কিশোরকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল সৎ বাবার বিরুদ্ধে। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য বীরভূমের দুবরাজপুরে। আহত কিশোরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে সিউড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, বছর বারোর ছেলেটা ছোটো থেকেই পরিবারের নানা অশান্তির শিকার হয়েছে। প্রথমে তার বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। এরপর তার মা বিয়ে করেন দেওরকেই। কাকাকেই শেষমেশ বাবা হিসাবে মানতে হয় তাকে। কিন্তু কয়েক দিন যেতেই সেই সম্পর্কেও ভাঙন ধরে। পরিবারে নিত্য অশান্তি লেগে থাকত। মূলত তাকে ঘিরেই অশান্তি হত সংসারে। সৎ বাবা অর্থাৎ তার কাকা তাকে মানতে পারেননি। স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি করতেন। এদিকে আবার ছেলেকে কাছছাড়া করতে চাননি মা। এরপর ওই কিশোর আলাদা জায়গায় তার মায়ের সঙ্গে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে।
ছেলেটির মায়ের কাছ থেকে জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার সকালে ওই কিশোর গোয়াল ঘরে গরু বাঁধতে গিয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সেখানে হাজির হন ওই কিশোরের সৎ বাবা অর্থাৎ কাকা। তারপর আচমকাই ধারাল অস্ত্র নিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ মারতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বাচ্চা ছেলেটা।
কিশোরের আর্তনাদ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তাকে কোনওভাবে উদ্ধার করে প্রথমে দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কেন এই হামলা, তা স্পষ্ট নয়। তবে কিশোর যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনেরই শিকার হয়েছে, তেমনটাই মনে করছেন প্রতিবেশীরা। কিশোরের মায়ের বক্তব্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। দুবরাজপুর থানায় এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। বিষয়টি খোঁজ খবর করা শুরু করেছে পুলিশ।
এক প্রতিবেশী বলেন, “ভেবেছিল ছেলেটাকে কাকা দেখবে, কিন্তু সেই এখন জীবন নিতে চাইছে। এসে জিজ্ঞাসা করল, কী রে তোর মা কই? প্রশ্ন করার পরই কোপাতে থাকে। আমরা চাই কঠোর শাস্তি হোক।”