বাগটুই : বগটুই-কান্ডে প্রথম থেকে তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনের দিকেই আঙুল তুলছিল আক্রান্তদের পরিবার। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আনারুলের নির্দেশেই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। বগটুইতে গিয়ে সেই আনারুল হোসেনকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, আনারুল যদি ওই পরিবারগুলির আর্জি শুনে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করতেন, তাহলে হয়ত এই ঘটনা ঘটত না। পাশাপাশি এসডিপিও ও আইসি-র গাফিলতি ছিল বলেও এ দিন উল্লেখ করেছেন মমতা। বৃহস্পতিবার বগটুই গ্রামে গিয়ে আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই আনারুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।
এ দিন বগটুই গ্রামে গিয়ে প্রথমে স্বজনহারাদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে ডিজিকে ডেকে বলেন, ‘আনারুল আমাদের ব্লক প্রেসিডেন্ট। তাঁর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল ওরা। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই আনারুলকে গ্রেফতার করা হবে।’ কেন সময় মতো পুলিশ পাঠাননি আনারুল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘সময় মতো পুলিশ পাঠালে হয়ত এই ঘটনা ঘটত না।’ পাশাপাশি এসডিপিও এবং আইসি-র বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। আগেই ওই দুজনকে ক্লোজ করা হয়েছে। মমতা বলেন, ‘একটা খুন যখন হয়ে গিয়েছে, তখন এসডিপিও-র সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’ এই গ্রামে আগে অনেক খুন-খারাপি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মমতা সাফ জানান, যাঁরা জেনেশুনেও পুলিশকে ঠিক মতো কাজে লাগাননি, তাঁদের কঠোর শাস্তি চান তিনি।
আর এই গ্রেফতারির ক্ষেত্রে কোনও ফাঁক চান না মমতা। পুলিশকে তাঁর নির্দেশ, যেখানে পালাক ধরে নিয়ে আসতে হবে অভিযুক্তদের। কাউকে পাওয়া গেল না, এ কথা শুনতে চান না তিনি। আনারুলের প্রসঙ্গেও মমতা বলেন, ‘হয় ওকে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করতে হবে, নাহলে যেখান থেকে সম্ভব তুলে এনে গ্রেফতার করতে হবে।’ মমতার এই নির্দেশের পর টিভি৯ বাংলার তরফ থেকে আনারুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।
বুধবার এই বিষয়ে আনারুলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাফ জানান, ওই সময় এলাকাতেই ছিলেন না তিনি। শুধু তাই নয়, শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছেন আনারুল। উপপ্রধান ভাদু শেখ খুনের পরেই খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই বার বার শান্তির বার্তাও দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।