‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলায় প্রথম চার্জশিট দাখিল সিবিআইয়ের

Post Poll Violence: সম্প্রতি ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্ত ভার সিবিআইয়ের হাতে ন্যস্ত করে কলকাতা হাইকোর্ট।

'ভোট পরবর্তী হিংসা' মামলায় প্রথম চার্জশিট দাখিল সিবিআইয়ের
ফাইল ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 02, 2021 | 6:00 PM

কলকাতা: ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলায় প্রথম চার্জশিট দাখিল করল সিবিআই। বীরভূমের বাসিন্দা মনোজ জয়সওয়ালের মৃত্যু মামলায় এই চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। গত ১৪ মে মনোজকে খুনের অভিযোগ ওঠে। এলাকায় তিনি বিজেপি কর্মী হিসাবে পরিচিত বলেই পুলিশের কাছে দাবি করা হয়। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় মূল দুই অভিযুক্ত পুলিশ হেফাজতেও রয়েছে। বৃহস্পতিবার দাখিল করা চার্জশিটে সিবিআই আবেদন করে, ধৃতরা যেন কোনও ভাবেই জামিন না পায়। জেল হেফাজতে রেখেই এই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এই সংস্থার সদস্যরা। রামপুরহাট মহকুমা আদালতে এই চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই।

মনোজ জয়সওয়ালের অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলার শুনানি ছিল বৃহস্পতিবার। রামপুরহাট মহকুমা আদালতে শুনানি চলাকালীন এই ঘটনায় অভিযুক্ত মইনুদ্দিন শেখের আইজীবী তাঁর মক্কেলের জন্য জামিনের আবেদন করেন। এর পরই সিবিআইয়ের আইনজীবী এজলাসে জানান, কোনও ভাবেই যেন এই অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর না করা হয়। বিচারপতি সেই আবেদনে সাড়া দেন। অন্যদিকে এই ঘটনায় অপর অভিযুক্ত ইমরান শেখেরও জামিন অগ্রাহ্য হয়েছে। মইনুদ্দিন, ইমরান দু’জনই এখন জেল হেফাজতে। এরই মধ্যে এদিন ৩৮০ পাতার চার্জশিট রামপুরহাট মহকুমা আদালতে জমা দেয় সিবিআই। দুই অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে রেখে ট্রায়াল চালানোর আবেদন জানান সিবিআই এর আইনজীবি।

ভোটের ফল প্রকাশের পর পরই গত ১৪ মে বীরভূমের নলহাটির এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। মনোজ জয়সওয়াল নামে ওই ব্যবসায়ী নলহাটিতে পাথর শিল্পের যন্ত্রাংশের ব্যবসা করতেন বলে জানা যায়। নলহাটি ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। নলহাটি থানার মধুরা গ্রামের কাছে খালের ধারে তাঁর ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। ধীরে ধীরে এই ঘটনায় রাজনৈতিক হিংসার রং লাগে। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃতদেহের ময়না তদন্ত করা হয়।

ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়ে বার বারই বিজেপি দাবি করেছে, রাজ্য সরকারের গাফিলতি ও রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার নড়বড়ে পরিকাঠামোই এই হিংসায় মদত দিয়েছে। পাল্টা আদালতে রাজ্য সরকার দাবি করেছে, যদি কোনও হিংসার ঘটনা ঘটে থাকে সমস্তই নির্বার্চনী আচরণ বিধি বলবৎ থাকাকালীন। অর্থাৎ সে সময় রাজ্য সরকারের হাতে কোনও রকম আইনশৃঙ্খলার ভার ছিল না। সবটাই পরিচালনা করেছে নির্বাচন কমিশন। এই ঘটনায় রাজ্য প্রশাসনের কোনও গাফিলতি নেই বলে দাবি করেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

তবে রাজ্যের জবাবে প্রথম থেকেই অসন্তুষ্ট ছিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকাতেও অসন্তোষ ছিল তাদের। সে কারণে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনকেই ঘটনা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার একক ভার দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। এরপরই সমস্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্ত ভার ন্যস্ত হয় সিবিআইয়ের হাতে। একই সঙ্গে এই মামলার তদন্তে সিটও গঠন করা হয়। সিবিআই তদন্তভার গ্রহণ করার দু’ সপ্তাহের মধ্যেই প্রথম চার্জশিট দাখিল করল। আরও পড়ুন: ‘ডিএ সরকারি কর্মীদের আইনগত অধিকার নয়’, হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তেই ‘ব্যাখ্যা’ রাজ্যের