‘ডিএ সরকারি কর্মীদের আইনগত অধিকার নয়’, হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তেই ‘ব্যাখ্যা’ রাজ্যের
রিভিউ পিটিশনের ভিত্তিতে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায়, কেন কেন্দ্রের হারে ডিএ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না?
কলকাতা: মহার্ঘ ভাতা মামলায় আবারও হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্য সরকারকে। কেন্দ্রীয় সরকারের সমান হারে ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না কেন? কেনই বা ডিএ দেওয়ার ভিত্তি অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (AICPI) মানা সম্ভব হচ্ছে না? বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের এমনই কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে।
তবে এই প্রথমবার নয়। এর আগেও একই প্রশ্নের সম্মুখীন একাধিকবার হতে হয়েছিল রাজ্য সরকারকে। এমনকী যে ট্রাইবুনালে যেখানে মূল ডিএ মামলার শুনানি হয়েছিল, সেখানেও একই ধরনের প্রশ্ন ওঠে। ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা যে সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য সেখানেই উল্লেখ করা হয়। যা নিয়ে রাজ্যের দায়ের করা রিভিউ পিটিশনের ভিত্তিতে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায়, কেন কেন্দ্রের হারে ডিএ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না? তখন ফের একবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল মন্তব্য করেন, “ডিএ সরকারি কর্মচারীদের আইনসঙ্গত অধিকার নয়।”
ডিএ মামলা যখন শুরু হয়েছিল, তখন গোড়ার দিকে ট্রাইবুনালের প্রথম বিচারপতি উল্লেখ করেছিলেন যে ডিএ রাজ্যের ‘দয়ার দান।’ এটা রাজ্য চাইলে দিতে পারে, না চাইলে নাও দিতে পারে। পরবর্তী সময় সেই মন্তব্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সরকারি কর্মচারীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়। এবং তাতে জয়ও মেলে। তারপরও এজলাসে শুনানির সময় একাধিকবার এই বিষয়টি ঘুরে-ফিরে এসেছে। যা বৃহস্পতিবার শুনানির সময় ফের উঠে আসে। এবং সেই নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে।
যদিও ডিএ মামলায় এ বার একটা হেস্তনেস্ত করা হতে পারে, এমন একটা ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে। কারণ আদালত ঠিক করেছে, আগামী ১৪ এবং ১৫ সেপ্টেম্বর; টানা দু’দিন এই ডিএ মামলার শুনানি করবে হাইকোর্ট। অর্থাৎ একটা বিষয় মোটামুটি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, আদালত খুব শীঘ্রই এই মামলায় যবনিকা টানতে চাইছে। যে মামলা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলছে আদালতে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারও ডিএ মামলার শুনানি চলাকালীন আদালতের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্য। চারিদিকে লক্ষীর ভাণ্ডারে যে ভাবে টাকা দেওয়া হচ্ছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যকে বকেয়া ডিএ মামলায় হাইকোর্টে ১ কোটি টাকা জমা রাখার আবেদন করেন মামলাকারীর আইনজীবী। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের অবশ্য বক্তব্য, রাজ্য আর কোথায় যাবে! যা দেওয়ার তা রাজ্যকে দিতেই হবে।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, ‘রাজ্যের ক্ষমতা অনুযায়ী টাকা দিচ্ছে। আমাদের হিসাব অনুযায়ী ধাপে ধাপে ১২৫ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয়েছে। বাকিটা নিয়েই আলোচনা চলছে। রাজ্য আবেদন করেছে। সেই আবেদন অনুযায়ী, আদালত কী পদক্ষেপ করে তারপর বাকিটা নিয়ে আলোচনা চলতে পারে।’ আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে টাকা দিতে পারলে বকেয়া DA মেটানোর জন্যও উদ্যোগী হোক রাজ্য, আদালতে উঠল এমনই দাবি