বীরভূম: বিশ্বভারতী (Visva-Bharati University)- তে পাঁচিল তোলা থেকে ছাত্র আন্দোলন, বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) ও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর (Bidyut Chakraborty) বিতণ্ডা লেগেই থাকে। এবার শান্তিনিকেতনে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা বন্ধ করাকে কেন্দ্র করে শুরু হল নয়া তরজা। বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে ‘মিথ্যাবাদী’, ‘পাগল’, ‘অশিক্ষিত’ এমনকী ‘থার্ড ক্লাস ভিসি’ বলে আক্রমণ করলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি।
এদিন পৌষ মেলার না করতে পারার জন্য রাজ্য সরকারের উপর এই দায় চাপান বিশ্বভারতীর উপাচার্য। তাঁর দাবি, রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবকে পৌষমেলা নিয়ে চিঠি লেখার পরেও সরকারের তরফে কোনও উত্তর মেলেনি। তাই ইচ্ছা থাকলেও করোনা পরিস্থিতিতে পৌষমেলা করার উদ্যোগ নেননি তাঁরা। কারণ মেলার আয়োজন করা কতটা যুক্তিযুক্ত হবে তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন তাঁরা।
যার প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা উপাচার্যকে একহাত নিলেন অনুব্রত। তাঁর দাবি, প্রশাসনের তরফে চিঠি দিয়ে বলা হয় মেলা নিয়ে আপত্তি নেই। অনুব্রতর কটাক্ষ, “ভিসি একটা পাগল তো! ও যে কী করে ভিসি হয়েছে ভগবান… জানি না”। তিনি দাবি করেন প্রশাসনের তরফে চিঠি দেওয়া হয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। তাঁর কথায়, “উনি সেই চিঠির কোনও উত্তর দেন নাই। উনি ভাবছেন যে উনি খুব চালাক। পাগলের মতো পরিচয় দিয়েছেন উনি। মিউনিসিপ্যালিটি একবার নয় দু’ বার চিঠি দিয়েছে”।
অনুব্রত এও বলেন, “উনি একবারে পাগল, অশিক্ষিত। ভিসি হওয়ার যোগ্যতাই নেই।” বিদ্যুৎবাবু দাবি করেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে পৌষমেলা করা নিয়ে কেন্দ্রের ছাড়পত্র পেয়েছেন। কিন্তু রাজ্যের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাননি। যা নিয়ে আবার শাসক দলের নেতার দাবি, “রাজ্য সরকারের কে আছে? রাজ্য় সরকার মেলায় শুধু পুলিশ দেয়”। এমনকি অনুব্রত সন্দেহ প্রকাশ করেন আদৌ রাজ্য সরকারকে উপাচার্য চিঠি দিয়েছেন কিনা। বলেন, “একটা মিথ্যাবাদী ভিসি, একটা থার্ডক্লাস ভিসি”।
উল্লেখ্য, এই নিয়ে মোট চারবার বন্ধ থাকল শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। যদিও বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্বভারতীর তরফ থেকে পৌষ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সকালে ছাতিমতলাই উপাসনার মাধ্যমে পৌষ উৎসবের সূচনা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও।
সেই উৎসবে বক্তব্য রাখতে গিয়েই বিদ্যুৎ বাবু বলেন, “আমরা পৌষ মেলা করার জন্য অক্টোবর মাস থেকেই উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সেই মতই অনুমতি নেওয়ার জন্য আমরা প্রথমে কেন্দ্র কে চিঠি পাঠাই। কিন্তু কেন্দ্র জানায় রাজ্যকে চিঠি দিয়ে এ সম্পর্কে জেনে নিতে। এর পরেই রাজ্য স্বাস্থ্য সচিবকে আমরা চিঠি পাঠাই। এমনকী এর পরে তিনবার রিমাইন্ডার দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি। এর পরেই প্রায় শেষে আমরা সিদ্ধান্ত নিই পৌষ মেলা করা সম্ভব নয়”।