বীরভূম: গত সোমবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন আনারুল হোসেন, বগটুইকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত। শুক্রবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন তিনি। প্রয়োজনীয় সমস্তরকম শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষার পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে তাঁকে ফের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় আনারুল দাবি করেন, বগটুইয়ের ঘটনায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি চক্রান্তের শিকার। এদিন আনারুল হোসেন বলেন, ” আমার শরীর ভালই আছে। সে কারণেই ছুটি দিয়ে দিল ওরা। কিন্তু আমাকে যে কারণে ধরা হয়েছে, সেটা চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি নির্দোষ, চক্রান্তের শিকার এটাই বলতে পারি।”
গত সোমবার হঠাৎ জেলের ভিতর অসুস্থ হয়ে পড়েন বগটুই গণহত্যা কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত আনারুল হোসেন। প্রথমে তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হবে। সেইমতো মঙ্গলবার রওনাও দেওয়া হয়। কিন্তু মাঝপথেই আনারুলের বুকে ব্যথা শুরু হয়। প্রচণ্ড ঘাম দিতে থাকে শরীরে। শরীরে অস্বস্তি বাড়তে থাকায় তাঁকে আবারও রামপুরহাট হাসপাতালেই ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রাখা হয় ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে।
গত ২১ মার্চ বীরভূমের রামপুরহাট বগটুই মোড়ে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় বড়শাল গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখের। সেই ঘটনার পর রাতেই বগটুইয়ে ১০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। প্রতিবেশীদের অনেকেই দেখেছিলেন সেই নৃশংস ঘটনা। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, শুধু পুড়িয়ে নয়, ধারাল অস্ত্রের কোপও দেওয়া হয় শরীরে। পরের দিন সকালে আটজনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়। পরে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও এক মহিলার মৃত্যু হয়। দিন কয়েক পরে আরও একজন মারা যান। গত ২৫ মার্চ আনারুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে। সেই সময় থেকেই জেল হেফাজতে রয়েছেন এই তৃণমূল নেতা।