জমি বিবাদের জেরে সংঘর্ষ চরমে, মৃত ১, তৃণমূল নেতার উস্কানিতেই বিবাদ!

TV9 Bangla Digital | Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Nov 19, 2021 | 11:15 PM

উপপ্রধান এদের থেকে প্রচুর টাকা নিয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান করতে পারেনি বলে অভিযোগ।

জমি বিবাদের জেরে সংঘর্ষ চরমে, মৃত ১, তৃণমূল নেতার উস্কানিতেই বিবাদ!

Follow Us

জলপাইগুড়ি : জমি দখল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মারামারি, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ। মৃত ১। সংঘর্ষের মৃত্যু হয়েছে বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তির। জখম হয়েছেন অন্তত সাত জন। সংঘর্ষে উস্কানি দেওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল গরাল বাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধানের শাহজাহান আলমের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সকাল থেকে ঘটনাস্থলে নামানো হয়েছে র‍্যাফ সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে ১ রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়েছে।

শুক্রবারের ঘটনা। জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে জলপাইগুড়ির গড়ালবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের শুভচনী গ্রামে। জমি দখলের ঘটনায় ঝামেলা মেটানোর নামে বেশ কয়েক দফায় দুই পরিবারের থেকে প্রচুর টাকা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান শাহজাহান আলমের বিরুদ্ধে।

স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের কোতয়ালি থানার অন্তর্গত শুভচনী গ্রামে ২২ বিঘা জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদ আমজান আলি ও আয়ুব আলির পরিবারের মধ্যে। ওই জমির মালিকানা নিয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠকও হয়েছে। পঞ্চায়েত স্তরেও ওই দুই পরিবারকে নিয়ে সালিসি সভা ডেকে আলোচনায় বসা হয়েছিল। কিন্তু সমাধান সূত্র মেলেনি। গতকাল ফের জমি নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন ওই দুই পরিবারের সদস্যরা। দু পক্ষের হাতাহাতিতে সাতজন জখম হন। তাদের জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় জখম মহম্মদ মজিমুদ্দিনকে (৫২) উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর আজ সকালে মৃত্যু সংবাদ গ্রামে পৌঁছলে ফের উত্তেজনার সৃষ্টি হয় ওই এলাকায়। অভিযোগ মজিমুদ্দিনের পরিবারের লোকেরা আয়ুব আলির পরিবারের ৯ টি বাড়ি ভাঙচুর করে। এর মধ্যে ৫ টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।

খবর পেয়ে দমকল ও পুলিশ ছুটে যায় ঘটনাস্থলে। সে সময় পুলিশ ও দমকল কর্মীদের ওই এলাকায় ঢুকতে বাধা দেন স্থানীয়দের একাংশ। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী ও র‍্যাফ নিয়ে এলাকায় ঢোকেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) পলাশ চন্দ্র ঢালি, ডিএসপি সদর সমীর পাল সহ পদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশি টহলদারি চলছে। দু পক্ষের মোট এগারো জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মৃতের পরিবারের এক সদস্যা আসমা পারভিন অভিযোগ করে বলেন, ‘বিবাদের মীমাংসা না করে স্থানীয় উপপ্রধান বেশ কয়েকবার দুই পরিবারের পক্ষ থেকে প্রচুর টাকা নিয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান করেননি। গতকাল আমরা যখন জমির কাগজ নিয়ে জমি দখল কিরতে যাই তখন উপপ্রধান শাহজাহান আলম উস্কানি দিয়েছেন। তার জন্যই উত্তেজনা বেড়েছে। মারামারির ঘটনায় আমার কাকা শ্বশুরকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানে হয়েছে। উনি আজ মারা গিয়েছেন। আমরা দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই দুই পরিবারের গন্ডগোল। উপপ্রধান এদের থেকে প্রচুর টাকা নিয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। গতকাল মারামারি হয়েছিল। সেই ঘটনায় ১ জন মারা গিয়েছে। আজ উত্তেজিত জনতা এদের বাড়ি গুলি ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এখন পুলিশ এসেছে।

ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন তৃনমূলের উপপ্রধান শাহজাহান আলম। তিনি দাবি করেন তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে দিচ্ছে সিপিএম এবং বিজেপি নেতারা।

তৃনমুল উপপ্রধানের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, ‘ইতিহাস বইয়ের পাতায় আপনারা অত্যাচারি শাহজাহানের নাম শুনেছেন। আর তৃণমূলের আমলে এই রকম অত্যাচারি শাহজাহান প্রতিটি গ্রামে গঞ্জে রয়েছে। আসলে এটা তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ। এখন এরা বাঁচার জন্য আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। এই উপপ্রধান গরু পাচার সহ বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। তৃণমূল নেতা বা পুলিশ সব জানে। কিন্তু কেউ কিছু বলেনা। কারণ এরা টাকা সাপ্লাই করে।’

আরও পড়ুন : মাঝ রাতে কে যেন নামল হলুদ ট্যাক্সি থেকে, শাবল দিয়ে তুলে নিল ম্যানহোলের ঢাকনা! তারপর…

Next Article