কোচবিহার: তিনি এখন বিজেপির রাজ্য়সভার সাংসদ। কিন্তু মনের মধ্যে চাপা অসন্তোষ রয়েই গিয়েছে গ্রেটার নেতা অনন্ত মহারাজের। শোনা যায়, যে দাবি-দাওয়াগুলিকে কেন্দ্র করে বিজেপির সঙ্গে অনন্ত মহারাজের বন্ধুত্ব হয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম পৃথক রাজ্যের দাবি। পৃথক রাজ্য জোটেনি অনন্ত মহারাজদের। এমনকী পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলও মেলেনি। এমন অবস্থায় এবার টিভি নাইন বাংলার ক্যামেরায় একরাশ আক্ষেপ উগরে দিলেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা অনন্ত মহারাজ। আরও একবার সরব হলেন পৃথক রাজ্য কিংবা অন্ততপক্ষে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবিতে।
লোকসভা ভোটে কোচবিহার বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে। উড়েছে সবুজ আবির। গোটা উত্তরবঙ্গে গেরুয়া আবির উড়লেও, বিজেপির থেকে কোচবিহার ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। লোকসভা ভোট পরবর্তী সময়ে মঙ্গলবার কোচবিহারে গ্রেটার নেতা অনন্ত মহারাজের বাড়িতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে কি এখানে নতুন কোনও সমীকরণের ইঙ্গিত? যদিও এই নিয়ে প্রশ্নে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি অনন্ত মহারাজ। তবে কেন্দ্রের উপর যে একটি চাপা অসন্তোষ রয়েছে, সে কথা গোপন করলেন না টিভি নাইন বাংলার ক্যামেরায়।
বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজের বক্তব্য, “বিজেপি সরকার যে প্রতিশ্রুতিগুলি দিয়েছিল, একটাও কার্যকর হয়নি। বিন্দুমাত্র কার্যকর হয়নি। কোচবিহার রাজ্য সংবিধানে তো ছিল। সি ক্যাটেগরি স্টেট ছিল। এই সি ক্যাটেগরির স্টেট কীভাবে অবলুপ্ত হল? সেটা আমরা জানতে চেয়েছিলাম।” অনন্ত মহারাজের দাবি, তাঁরা পৃথক রাজ্য চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় তাঁদের বলা হয়েছিল, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হলে ভাল হবে। তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি নজরও দিতে পারবে। কিন্তু এখন আক্ষেপের সুরে গ্রেটার নেতা বলছেন, “ভোট ঘোষণা হয়ে গেল, ভোট হয়ে গেল… কিন্তু রাজ্য বানিয়ে দিল না। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হলে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকত, সেটাও করল না। আমাকে অমিত শাহ বলেছেন, তিনি বিষয়টি দেখছেন। কিন্তু রেজাল্ট কী হচ্ছে আমি জানি না।”
গ্রেটার নেতার আরও দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস দল হিসেবে পৃথক রাজ্যের বিরুদ্ধে হতে পারে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার এর বিরুদ্ধে নয়। পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি আরও জোরদার করে তিনি বলেন, “এটাকে যদি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হত, এখানকার মানুষের সার্বিক বিকাশ হত। সরাসরি ফান্ড আসত এখানে। কিন্তু সেটা হল না। যা দেখলাম, এখানকার মানুষের কপালে লাথি দেওয়া হয়েছে। আমার বিশ্বাস যতক্ষণ না পৃথক রাজ্য হচ্ছে, ততক্ষণ এখানকার মানুষ হাল ছাড়বে না।”