কোচবিহার: বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মেখলিগঞ্জের উছলপুকুরিতে গরুপাচার রুখতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ । গ্রামবাসীদের আক্রমণে আহত ১৭ জন পুলিশ কর্মী । তীব্র উত্তেজনা এলাকায় । মেখলিগঞ্জের উছলপুকুরির বামুনিয়াপাড়ে পাচারের উদ্দেশ্যে বিপুল পরিমাণ গরু মজুত রাখার খবর পেয়ে শনিবার বিকেলে অভিযানে যায় পুলিশ ৷ বাড়ি ঢুকে পুলিশ গরু আনতে গেলে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে এলোপাথাড়ি ঢিল ছুড়তে থাকে পুলিশকে লক্ষ্য করে। এতে ওই পুলিশ কর্মীরা আহত হন। তাঁদের মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে গ্রামবাসীদের হামলার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩৪ টি গরু উদ্ধার করে। পাশাপাশি ৪ জন মহিলা-সহ আরো ২ জন কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, শনিবার রাতে বেশকিছু গরু পাচার করার জন্য ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বামুনিয়াপাড়ে অভিযান চালায় পুলিশ। তখনই তাঁদের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে। এলোপাথাড়ি হামলায় গুরুতর জখম হয়েছেন কয়েকজন পুলিশ কর্মী। তাঁদের হাতে-পিঠে গুরুতর চোট লেগেছে।
এর আগেও একাধিকবার এই মেখলিগঞ্জে গরু পাচারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এলাকার বেশকিছু জায়গায় সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নেই বলেই জানিয়েছে পুলিশ। সেই জায়গা দিয়েই পাচার করা হয় গরু। আগেও পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ উদ্যোগে একাধিকবার গরু পাচারকারীদের আটকানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্ত কিংবা অসম-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় বার বার অভিযোগ ওঠে, কাঁটাতার পার করে গরু পাচারের। বিএসএফ ও বিজিবির ভূমিকা এ ক্ষেত্রে কতটা নিরপেক্ষ হয় তা নিয়েও বহুবার প্রশ্ন তোলা হয়। গরু পাচার দুই দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অন্যতম সমস্যা কারণ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফের এক্তিয়ার ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার বাড়িয়েছে কেন্দ্র। এই এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে না জানিয়েই তল্লাশি ও প্রয়োজনে সন্দেহভাজনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার ক্ষমতাও বিএসএফকে দেওয়া হয়েছিল। এই নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয় বিজেপি বিরোধী রাজ্য সরকার গুলি। ইতিমধ্যেই পঞ্জাব ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রস্তাবও পাশ হয়েছে।
কিছুদিন আগেই গরু পাচারকারী সন্দেহে রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটা গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা থেকেও এক বাংলাদেশীকে গ্রেফতার করে রাজগঞ্জ থানার হাতে তুলে দেয় বিএসএফ। রাজগঞ্জের অঙ্গতগঞ্জ গ্রামে এক ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন অবস্থায় ঘোরাফেরা করতে দেখেন কর্তব্যরত বিএসএফ জওয়ানরা। তাঁরা প্রথমে আটক করে। এরপরই তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। জেরার মুখে ওই ব্যক্তি জানিয়েছিলেন, তাঁর নাম আলমিন হোসেন। বাড়ি বাংলাদেশের খুটাগঞ্জ গ্রামে। পাসপোর্ট ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করেছেন তিনি। শাহু নদীপথে ভারতে এসেছেন গরু নিতে বলে জেরায় স্বীকারও করেন।