কোচবিহার: নাটাবাড়িতে (Natabari) তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠী সংঘর্ষে মৃত্যু হল এক জনের। মৃতের নাম ওসমান গনি (৪৮)। সোমবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের দেওচড়াই গ্রামের তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে উভয় পক্ষের ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । প্রত্যেকেই তৃণমূলের নেতা কর্মী ।
রবিবার সকালে নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের দেওচড়াই অঞ্চলে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়। বাজার থেকে ফেরার পথে ওসমান গনি মাথায় আঘাত লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওসমান।
তারপর তাঁকে তুফানগঞ্জ হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় । আঘাত গুরুতর হওয়ায় পরবর্তীতে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ওসমান গনিকে। কিন্তু সেখানেও তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। এরপর শহরের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় রবিবার বিকেলে। সোমবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার সকালে। এদিন দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী বাচিরণ বেওয়ার ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। এই হামলাকে কেন্দ্র করেই রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে কৃষ্ণপুর গ্রামের ঘনাপারা এলাকা। দু’পক্ষের মারামারিতে আহত হন কমপক্ষে ২৫ জন। আহতদের মধ্যে কয়েকজন মহিলাও ছিলেন।
দেওচড়াই কৃষ্ণপুর এলাকায় নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রাক্তন জেলার দুই সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অনুগামীদের সঙ্গে ওপর প্রাক্তন সভাপতি পার্থ প্রতিম রায়ের বিবাদ নতুন কিছু নয়। রবিবার সকালে তা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। দুই পক্ষের অনুগামীদের মধ্যে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। এর জেরেই উত্তপ্ত হয়ে হয়ে গোটা গ্রাম। বচসা চেহারা নেয় সংঘর্ষের। লাঠি, হাঁসুয়া, ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। প্রতিরোধ গড়ে তোলেন অপরপক্ষও।
বেশ কয়েকজন তৃণমূল সমর্থক গুরুতর আহত হন। অনেককেই তুফানগঞ্জ মহাকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আবার বেশ কয়েক জনকে কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। হামলার নেপথ্যে মতিহার বলে স্থানীয় এক নেতার হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলছেন আক্রান্তদের অনেকে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
গোষ্ঠীকোন্দলের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মন। তিনি বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমি সকলের কাছে অনুরোধ করব শান্তি বজায় রাখুন। অল্প ছোটো কোনও ঘটনায় প্ররোচিত হবেন না, কারোর কথায় কান দেবেন না। বিচার-বুদ্ধি-বিবেচনা দিয়ে সিদ্ধান্ত নিন। অল্প ঘটনাই বড় আকার নিতে পারে।”
ঘটনার পর সোমবার সকাল থেকেই এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। বাজারের প্রায় সব দোকান বন্ধ। তৃণমূল কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় রবিবার দিনভর তল্লাশিতে এখনও পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: TMC: ‘ন্যায্য রায় পান দিদি’, রাজ্যের মঙ্গল কামনায় হোম-যজ্ঞের আয়োজন তৃণমূলের
আরও পড়ুন: Unknown Fever: অজানা জ্বরের বলি ২৫ দিনের শিশু, সেপ্টিসেমিয়ায় মৃত আরও ১!