কোচবিহার: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তে এবার কোচবিহারের মাথাভাঙা হাসপাতালে পৌঁছলেন তদন্তকারীরা। তবে তাঁরা হাসপাতালে ঠিক কোন সূত্রের সন্ধানে এসেছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।হাসপাতাল সুপার না থাকায়, তদন্তকারীরা ওয়ার্ড মাস্টারের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন নথিপত্র দেখেন।
এ প্রসঙ্গে, মাথাভাঙা হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মোকবুল হোসেন বলেন,”সিবিআই টিমের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে বা কী উদ্দ্যেশ্যে তাঁরা এসেছিলেন, সে প্রসঙ্গ সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলতে পারব না।”
সূত্রে মারফত জানা গিয়েছে, ভোট পরবর্তী পর্যায়ে মাথাভাঙাতে অনিল বর্মন নামে এক বিজেপি কর্মীর বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে ওই বিজেপি কর্মীর দেহ জঙ্গলে একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়। ওই ব্যক্তির দেহ মাথাভাঙা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়। প্রাথমিকভাবে এটির পিছনে আত্মহত্যার তত্ত্ব খাঁড়া করা হয়েছিল। কিন্তু পরিবার প্রথম থেকেই খুনের অভিযোগ তুলে আসছিল। সেই ঘটনার তদন্তে এদিন মাথাভাঙা হাসপাতালে আসতে পারেন তদন্তকারীরা।
ইতিমধ্যেই ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী অফিসারদের তলব করতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সিবিআই সূত্রে খবর, এবার ধাপে ধাপে প্রত্যেকটি কেসের তদন্তকারী রাজ্যের অফিসারদের তলব করা হবে। ভোট পরবর্তী সংশ্লিষ্ট হিংসার মামলার বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে রাজ্যের তদন্তকারী অফিসারদের কাছেই। যেমন কাদের কাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, কাদেরকে গ্রেফতার করা হয়নি, কেন গ্রেফতার করা হয়নি, কী কী তথ্য প্রমাণ রাজ্য পুলিশের হাতে এসেছিল, তা বিস্তারিত তথ্য রাজ্যের তদন্তকারী আধিকারিকদের কাছ থেকেই জানতে চায় সিবিআই।
প্রয়োজনে ওই অফিসারদের বয়ানও রেকর্ড করে রাখতে চান তদন্তকারী অফিসাররা। যেহেতু প্রাথমিক তদন্ত তাঁরাই করেছেন, তাই ঘটনার তাত্ক্ষণিক পর্যায়ের বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ মিলতে পারে। সোমবারই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে সিবিআই। কোনও চাপের কারণে অভিযোগ নথিভুক্ত হয়নি অথচ ঘটনা ঘটেছে এমন ঘটনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে সিবিআই।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় নতুন ৩টি মামলার মধ্যে ১টি নদিয়া জেলা ও ২টি উত্তর২৪ পরগনার। ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে মোট ৮৪ জন তদন্তকারী অফিসার বা আইও-র মধ্যে ইন্সপেক্টর, ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার রয়েছেন। এছাড়া ২৫ জন কর্তা রয়েছেন এই দলে। জয়েন্ট ডিরেক্টর, ডিআইজি, এসপি পদমর্যাদার এই ২৫ জন অফিসার। প্রত্যেক জোনের টিমে ২১ জন করে তদন্তকারী অফিসার বা আইও।
রাজ্যে ১৫ টি খুন এবং ৬ টি ধর্ষণের মামলায় ২৭ অগাস্ট ১১টি এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। খুন, খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখা, অপহরণ, অনুপ্রবেশের মতো একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়। গত শনিবার আরও ১০টি এফআইআর দায়ের করা হয়। ২৯ অগস্ট আরও সাতটি এফআইআর দায়ের করা হয়। পরে আরও দুদফায় চারটি ও তিনটি এফআইআর দায়ের করা হয়। আরও পড়ুন: ঘরে ছিল কোন ‘গুপ্তধন’? লুঠে বাধা পেয়েই কি খুন? পর্ণশ্রীতে মা-ছেলের রহস্যমৃত্যুতে বিভ্রান্ত তদন্তকারীরা