ঘরে ছিল কোন ‘গুপ্তধন’? লুঠে বাধা পেয়েই কি খুন? পর্ণশ্রীতে মা-ছেলের রহস্যমৃত্যুতে বিভ্রান্ত তদন্তকারীরা

Parnasree: পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ভালো ছিল না।

ঘরে ছিল কোন 'গুপ্তধন'? লুঠে বাধা পেয়েই কি খুন? পর্ণশ্রীতে মা-ছেলের রহস্যমৃত্যুতে বিভ্রান্ত তদন্তকারীরা
নিজস্ব চিত্র ইনসেটে নিহত ছেলে ও মা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 07, 2021 | 11:24 AM

কলকাতা: পর্ণশ্রী খুনের (Parnasree Murder Case) তদন্তে কারণ নিয়ে বিভ্রান্ত তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ দেখেছে, ঘরের ভিতর জিনিসপত্র লন্ডভন্ড অবস্থায় ছিল। যা থেকে তদন্তকারীদের একটি অনুমান, লুঠ করতে এসে বাধা পেয়ে খুন করতে পারে। যদি সেটিই হয়ে থাকে, তাহলে প্রশ্ন এমন কো জিনিস তাঁরা ঘরে রেখেছিলেন? খুনের সঙ্গে পরিচিত কেউ যুক্ত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।  পর্ণশ্রীয় খুনে উঠে এসেছে আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, তমজিত মন্ডল স্কুল ড্রেস পরা অবস্থাতেই বিছানায় পড়ে ছিল। পাশের ঘরে পড়ে ছিল তার মা অর্থাত্ সুস্মিতার রক্তাক্ত দেহ। দু’জনেরই গলার নলি গভীর ভাবে কাটা ছিল। তদন্তকারীদের অনুমান, বিকালের আগেই ঘটনাটি ঘটেছে। আর সে সময় অনলাইনে ক্লাস করছিল তমোজিত। তার মাঝেই খুন হয়ে থাকতে পারে সে।

তদন্তকারীরা যখন ঘরে ঢুকেছিলেন, তখন দেখেন ঘরের বেসিন ছিল রক্তে মাখা। মেঝেতে পড়ে ছিল বটি ও ছুরি। পুলিশ সেগুলিকে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে। এছাড়াও যে ফোনের মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস চলছিল, সেটিও উধাও। সেই ফোনে কিছু তথ্য প্রমাণ থেকে যেতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

সুস্মিতাদের ঘরে ছিল না কোনও সিসি ক্যামেরা। তবে ফ্ল্যাটের সিঁড়িতে ছিল, সেটিও খারাপ। তাই প্রমাণ সংগ্রহে কিছুটা হলেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তদন্তকারীদের। সোমবারই পর্ণশ্রীর সেনপল্লি এলাকায় একটি বহুতলে বছর চল্লিশের সুস্মিতা মণ্ডল ও তাঁঁর ছেলে বছর বারোর তমোজিতের গলা নলি কাটা দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তকারীরা বলছেন এই ঘটনার পরতে পরতে রয়েছে রহস্য।

পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ভালো ছিল না। ইতিমধ্যে সুস্মিতার স্বামী পেশায় ব্যাঙ্ক কর্মী তপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তমোজিতের এক গৃহশিক্ষককেও।

,তিনি সোমবার বিকালে তমোজিতকে পড়াতে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর বয়ান অনুযায়ী, তিনি গিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ অবস্থায় দেখতে পান। ডাকাডাকির পর দরজাও ধাক্কান। তারপর চলে যান।

এদিকে, সন্ধ্যায় নি্দিষ্ট সময়ে ফেরেন সুস্মিতার স্বামীর পেশায় ব্যাঙ্ক কর্মী তপন মণ্ডল। তপনের বয়ান অনুযায়ী, বাড়ি ফিরে তিনি দেখেন, বিছানা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পড়ে রয়েছে তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নিথর দেহ। সামনে গিয়ে দেখতে পান, দুজনের গলার নলি নৃশংসভাবে কেটে হত্যা করা হয়েছে। তিনি যখন ফেরেন, ফ্ল্যাটের দরজা খোলা ছিল বলেই দাবি করেন। এদিকে, যখন গৃহশিক্ষকের বয়ান অনুযায়ী, ফ্ল্যাটের দরজা ছিল বন্ধ। ফলে ধোঁয়াশা সেখানেই।

একাধিক বিষয় খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। যেহেতু তপনবাবুর পরিবারের সদস্য মাত্র ৩-ই ছিল, তাই চেনাশোনা কোনও ব্যক্তি ছাড়া এই ঘটনা ঘটনো একপ্রকার অসম্ভব বলেই ধারণা পুলিশের। কে বা কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে তা জানতে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখারও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওই আবাসনের সিসিটিভি অচল বলে জানা গিয়েছে। এই অবস্থায় বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ। আরও পড়ুন: স্বামীর পিছু নিয়েও ধরতে পারেননি, বন্ধ ঘরে নিজেরই বিধবা দিদির অবস্থা দেখে বাকরুদ্ধ মহিলা!