কোচবিহার: বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর গুলিতে রাজবংশী যুবকের মৃত্যু ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতর রাজ্য রাজনীতি। উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে কোচবিহারের মাথাভাঙার জনসভা থেকে বিএসএফ-এর গুলিতে মৃত্যু নিয়ে সরব হয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃত যুবকের মায়ের চোখের জল মুছিয়ে বিষয়টি নিয়ে ‘শেষ দেখে ছাড়ার’ কথাও বলেছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। এর পরই অভিষেককে আক্রমণ করলেন কোচবিহারের সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। বিজেপি সাংসদের কটাক্ষ, মাথাভাঙ্গায় অভিষেকের বক্তব্য রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার উদাহরণ। নিশীথের দাবি, রাজনীতিতে দেউলিয়া হয়ে গিয়েই দেশের জওয়ানদের উদ্দেশে এমন মন্তব্য করেছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
এ ব্যাপারে নিশীথ বলেছেন, “মাথাভাঙার মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের বিএসএফ জওয়ানদের সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, আমি মনে করি এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসাবে এই ধরনের মন্তব্য করা উচিত নয়। যাঁরা দেশকে সুরক্ষিত রাখবার জন্য নিজের পরিবার, পরিজন, আত্মীয়-স্বজনকে ছেড়ে সারা বছর সীমান্তে পড়ে থাকেন। দেশমাতাকে সুরক্ষিত রাখেন। তাঁদেরকে সোজাসুজি কাঠগড়ায় তোলা ঠিক কাজ নয়। আমরা যখন নিশ্চিন্তে শুতে যখন, তখন আমাদের নিরাপত্তা দেয়।” এই কথা বলার পরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক দেউলিয়ার ব্যাপারে মন্তব্য করেন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ। এ নিয়ে তিনি বলেছেন, “রাজনৈতিক ভাবে একেবারে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন। কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকবার কারণে এ ধরনের মন্তব্য করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে যাঁরা জড়িত তাঁদের ছোট করে দেশকে ছোট করার চেষ্টা করেন। খুব লজ্জাজনক মন্তব্য করেছেন। কোনও দায়িত্বশীল নেতার এ ধরনের মন্তব্য করা কখনই উচিত নয়।”
মাথাভাঙার সভামঞ্চে মৃতের পরিবারের লোকেদের সামনে অভিষেক বলেছিলেন, “আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি এই রাজবংশী তরতাজা যুবককে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে যার প্রাণ নিল বিএফএফ, রাজবংশীদের হত্যা করে যাঁরা রাজবংশীদের দরদ দেখায় আমি সেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও এখানকার ডেপুটিকে প্রশ্ন করতে চাই প্রেম কুমার কে ছিলেন? জঙ্গি? ওর অপরাধ কী? সে রাজবংশী? তিনি যখন সকালে মাঠে ঘুরতে গিয়েছিলেন তার কাছ থেকে কি বোমা-বন্দুক উদ্ধার হয়েছিল? তার থেকে গরু পাওয়া গিয়েছিল? ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলাম। তোমাদের অবস্থান স্পষ্ট করো। ক্ষমা চাও।”
তৃণমূল নেতা এবং প্রাক্তন সংসদ পার্থ প্রতিম রায় এ ব্যাপারে বলেছেন, “এসব কথা আসলে চটকদারি। রাজনৈতিক ভাবে শক্ত মাটিতে দাঁড়িয়ে আছেন অভিষেক। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। সীমান্তে যুবককে কেনো গুলি করে মারা হলো তার জবাব তো দিতেই হবে।”