Dinhata: ‘পিঠে বানানোর নামে রাত ১২টায় পার্টি অফিসে ডাকে’, এবার উদয়নের এলাকাও কি সন্দেশখালি?
Dinhata: তিনি বলেন, "তৃণমূলের গুন্ডারা রাত ১২ টার সময়ে আমাকে পার্টি অফিসে ডাকে। বলে পিঠে বানাতে হবে। ওদের তো খারাপ মতলব ছিল। আমি যখন রাজি হইনি, তখন পরের রাত ৯টায় এসে আমার বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। আমার মাথায় বন্দুক ঠেকায়।"
কোচবিহার: বাংলার এখন হটস্পট সন্দেশখালি। একের পর এক নারী নির্যাতনের অভিযোগ সামনে আসছে। অভিযোগ উঠেছে, রাতবিরেতে সেখানকার মহিলাদের দলীয় কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যাওয়া হত। যা নিয়ে শোরগোর রাজ্য রাজনীতি। ম্যাজিস্ট্রিটের কাছে একাধিক মহিলা গোপন জবানবন্দিও দিয়েছেন। কিন্তু তারই মধ্যে দিনহাটাতেও ভয়ঙ্কর অভিযোগ। ঠিক একই রকমের অভিযোগ। পিঠে বানানোর নামে রাতে দলীয় কার্যালয়ে তলবের অভিযোগ। সাড়া না দেওয়ায় বাড়িতে ভাঙচুর-মারধরের অভিযোগ।
দিনহাটার বুড়িরহাট অঞ্চলের নির্যাতিতা ওই মহিলার অভিযোগ, “আমাকে বিশু ধর, দিলীপ ভট্টাচার্যের গুন্ডাবাহিনী আমাকে রাত বারোটা সময়ে পার্টি অফিসে ডাকে। পিঠে বানানোর নাম করে ডাকে। আমি রাজি হইনি। আমি বলি রাত বারোটায় কেউ যাবে পিঠে বানাতে। মেয়েদের কী সম্মান নেই? আমার বাড়িতে এসে মাঝেমধ্যে অত্যাচার করত। আমি বলতাম, আমার কী সম্মান নেই? আমাকে কি বাঁচতে দেবেন না?” তিনি আরও বলেন, “বিকাল চারটের সময়ে ওরা আসেন বুথ সভাপতি। বলেন কালকে যেতে হবে। আমি না বলে দিই। আমার তো সম্মান বলে একটা জিনিস রয়েছে। আমি হাতজোড় করে বলি। আমাকে একটু বাঁচতে দিন, আমার সম্মান রয়েছে। আমি যাইনি বলে, রাত বারোটা লোক এসে আমার বাড়িতে ভাঙচুর করে। ওদের একটা খারাপ উদ্দেশ্য রয়েছে। কিন্তু আমি তো সেই ধরনের মহিলা নই।”
তবে তিনি একাই নন। আরও এক মহিলা নির্যাতনের স্বীকার। তিনি বলেন, “তৃণমূলের গুন্ডারা রাত ১২ টার সময়ে আমাকে পার্টি অফিসে ডাকে। বলে পিঠে বানাতে হবে। ওদের তো খারাপ মতলব ছিল। আমি যখন রাজি হইনি, তখন পরের রাত ৯টায় এসে আমার বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। আমার মাথায় বন্দুক ঠেকায়।”
আরেক মহিলা বলেন, ” ভোটের গণনার পর দিনই দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। আমার স্বামীকে পায়নি। তারপর আমাকে ধরে।” গত কয়েকমাসে এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এতদিন ভয়ে মুখ খোলেননি কেউই। সন্দেশখালির সাহসিনীদের দেখে বুক বলে এখন সামনে আসছেন দিনহাটার নির্যাতিতারা। দুজন থানায় ইতিমধ্যে অভিযোগও দায়ের করেছেন।
এ প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ” সন্দেশখালিকে সামনে রেখে এখন নতুন পিঠে-কাহিনী চালু করেছে বিজেপি। কোনও নেতাই রাত বারোটা তো দূরের কথা, রাত ১০ টার পর বাইরে থাকেন কিনা, জানি না। পিঠে খাওয়ার বয়স আর নেই।” তিনি চ্যালেঞ্জ করেছেন, “মানুষ যদি মনে করেন, আমি এটা করতে পারি, তাহলে মানুষ আমার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেবেন।”
দিনহাটার এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “কোচবিহারের অভ্যন্তরের বেশ কিছু এলাকায় আইন শৃঙ্খলার সমস্যা রয়েছে। যেখানে উদয়নবাবু নিজেই প্ররোচনামূলক অনেক মন্তব্য করেন। অভিযোগ খতিয়ে না দেখে, যারা অভিযোগ করছে, তাদের বিরুদ্ধে যাওয়া একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আর সেই কারণেই সন্দেশখালি তৈরি হয়েছে।”