কোচবিহার: কথায় বলে, ‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ায় প্রাণ যায়’। কোচবিহারের ক্ষেত্রে যেন সেটাই সত্যি। নেত্রী বারবার সতর্ক করেছেন । কিন্তু কে শোনে কার কথা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিরাম নেই কোচবিহার জেলা তৃণমূলের (TMC)। দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের জেরে সরতে হচ্ছে গীতালদহের ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে। তলবি সভা ঘিরে চরম উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে জারি করতেব হয়েছে ১৪৪ ধারা।
কোচবিহারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামছে কই? ঘাসফুলের কোন্দল আরও তীব্র হয়ে উঠছে। একদিকে সিতাই কেন্দ্রের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া। অন্যদিকে জেলা তৃণমূল সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মন ও দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। দুই শিবিরের গোলমালের প্রভাব পড়েছে গীতালদহ এক গ্রাম পঞ্চায়েতে। দুর্নীতির অভিযোগ এনে পঞ্চায়েত প্রধান আবু আল আজাদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন ছজন পঞ্চায়েত সদস্য। এরপরই আবু আল আজাদকে সরাতে ডাকা হয় তলবি সভা। আর এই তলবি সভা ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। পঞ্চায়েত অফিস এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। মোতায়েন পুলিশ, কমব্যাট ফোর্স।
স্থানীয় এক গ্রামবাসীর কথায়, “এখানে সারাদিনই লড়াই, অশান্তি। মারপিট, ভাঙচুর চলছেই। আমরা রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছি। এই বোধহয় প্রাণটা গেল। তলবি সভা নিয়েও ঝামেলা হয়ে গিয়েছে। চতু্র্দিকে খালি পুলিশ আর পুলিশ।”
শুধু মাত্র পঞ্চায়েত স্তরেই নয়, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব জেলা স্তরেও। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকড় কত গভীরে তার প্রমাণ মিলেছে সম্প্রতি কোচবিহারের দিনহাটা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও। নিজের কেন্দ্রেই গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে ভোটে ব্রাত্য ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ভোটের দিন সময় কাটান টিভি দেখেই। কান পাতলে শোনা যায় গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই বিরোধী পক্ষের নেতাদের সুপারিশে কোচবিহারে ভোটের সময় তাঁকে শান্তিপুরের নির্বাচনে পাঠিয়ে কার্যত দূরে সরিয়ে রাখেন সর্বোচ্চ নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনের পর থেকেই জেলার একাধিক পঞ্চায়েতে প্রধান বা উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করেছেন পঞ্চায়েতের সদস্যরা। দলের আগাম অনুমতি ছাড়া এইভাবে আর যখন তখন অনাস্থা পেশ করা যাবে না তা আগেই ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। শুধু তাই নয়, এতদিন পর্যন্ত পেশ করা অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাহারের নির্দেশও দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। তারপরেও কেন অনাস্থা আনা হল, কেনই বা তলবি সভা ঘিরে এমন ব্যাপক উত্তেজনা তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। যদিও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: Clash in Moyna: টোটো ভাঙা নিয়ে বচসা, পুলিশের সঙ্গে দা-কাটারি নিয়ে ‘খণ্ডযুদ্ধ’ মহিলাদের, তপ্ত ময়না!