বনগাঁ: শীতলকুচিতে (Sitalkuchi) আধা সেনার গুলিচালনা ও তাতে ৫ জনের মৃত্যুতে তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) পদত্যাগ দাবি করেছেন তিনি। রবিবারই তিনি কোচবিহার যাচ্ছেন বলে বনগাঁর সভা থেকে ঘোষণা করেন। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনী যে বিজেপির হয়ে লাগাতর কাজ করে যাচ্ছে, আজকের শীতলকুচির ঘটনা তারই প্রমাণ।
ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার রাজ্য জুড়ে ধিক্কার দিবস পালন করবে তৃণমূল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পদত্যাগের দাবিতে রাজ্যের প্রতিটি ব্লক ও অঞ্চল স্তরে মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ করা হবে বলে সূত্রের খবর। উল্লেখ্য, মাথাভাঙা ও শীতলকুচির মধ্যবর্তী এলাকা জোরপাটকিতে গুলি চালনার অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। সেখানে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
তিন জনের দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রাস্তাতেই পড়ে থাকে আরও এক জনের দেহ। কিছুক্ষণ পর হাসপাতালেই মৃত্যু হয় আরও এক জনের। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। প্রত্যেকেই নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দিয়েছেন।
হাসপাতালেই আহত এক যুবকের বক্তব্য, তাঁরা মাদ্রাসা বুথে ভোট দিতে যাচ্ছিলেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী রাস্তায় এক বাচ্চাকে মারে। তারা প্রতিবাদ করাতেই গুলি চালাতে শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। এলোপাথাড়ি গুলি লাগে পরপর চার জনের গায়ে। আহত আরও যুবকের বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় বাহিনী কীভাবে মারধর করেছে, তার গোটা ভিডিয়োটা রয়েছে। আমি ভিডিয়ো করছিলাম বলেই গুলি চালায়।”
ঘটনার প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে যায়। রিপোর্ট তলব করে কমিশন। তাতে সিআরপিএফের গুলি চালনার কথা উল্লেখ থাকে। তবে কমিশনের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, ৩০০-৪০০ জন উন্মত্ত জনতা আধা সেনাদের ঘিরে রেখেছিল। আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায় সিআরপিএফ। উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন ফোন করেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ আফতাবকে। গোটা ঘটনার খোঁজ নেন তিনি।
তবে বিজেপির তরফ থেকে পাল্টা আঙুল তোলা হয় নেত্রীর দিকেই। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে চাইছিলেন রক্তাক্ত হোক ভোট। বারবার বিভিন্ন সভা থেকে মানুষকে বলেছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আক্রমণ কর। হাত-খুন্তি নিয়ে আক্রমণ কর। তাঁর উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরেই এই ঘটনা।”
ভোটের সাম্প্রতিকতম খবর জানতে ক্লিক করুন
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই কোচবিহারের সভা থেকে দলীয় কর্মী সমর্থকদের আধা সেনাদের ঘেরাও করার পাঠ পড়ান। তাতেই কমিশন তাঁকে শোকজও করে। শীতলকুচির এই ঘটনা তার জেরেই ঘটেছে বলে পাল্টা দাবি করে বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন নরেন্দ্র মোদীও।