Siliguri Municipal Election: ‘সৌরভের মতো ছক্কা হাঁকাব,’ অশোক স্তম্ভ রক্ষায় যুদ্ধের মেজাজ সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী সুরোজের
Municipality Election: বৃদ্ধতন্ত্রের তকমা সরিয়ে তরুণদের তুলে ধরতে পিছু হটছে না বামেরা। তাই শিলিগুড়ি পুরভোটে (Siliguri Municipal Election) গায়ে ছাত্র রাজনীতির গন্ধ মাখা এক টগবগে যুবককে এগিয়ে দিয়েছে তারা।
প্র সে ন জি ৎ চৌ ধু রী
একুশের কলকাতা পুরভোটে ৪৩ জন তরুণ তুর্কিকে ভোট ময়দানে নামিয়েছিল সিপিএম (CPIM)। যাঁদের বয়স ৩০ বছরের মধ্যে। তাঁরা কেউই কাউন্সিলর হতে পারেননি বটে, তবে বৃদ্ধতন্ত্রের তকমা সরিয়ে তরুণদের তুলে ধরতে পিছু হটছে না বামেরা। তাই শিলিগুড়ি পুরভোটে (Siliguri Municipal Election) গায়ে ছাত্র রাজনীতির গন্ধ মাখা এক টগবগে যুবককে এগিয়ে দিয়েছে তারা। যিনি সমস্ত রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে এখনও পর্যন্ত শিলিগুড়ি পুরভোটে কনিষ্ঠতম প্রার্থী। নাম সুরোজ কুণ্ডু।
কে বলে সিপিএমে সব বুড়োদের দল:
নাম সুরোজ কুণ্ডু। ধাম ফালাকাটা হলেও জন্ম থেকেই তিনি শিলিগুড়ি শহরের বাসিন্দা। শিলিগুড়ির মহাকাল পল্লির বাসিন্দা সেই যুবক এবার পুরভোটের টিকিট পেয়েছেন। এসএফআই-এর জেলা কমিটির সদস্য প্রাক্তন মন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে ডাকেন ‘জেঠু’ বলে। তৃণমূল জমানাতেও ২০১৫ সালে লাল ঝান্ডা অক্ষত রেখে যিনি বামেদের অশোক স্তম্ভ বলে অভিহিত হন, সেই অশোক ভট্টাচার্যের কথাতেই প্রার্থী হতে রাজি হয়ে গিয়েছেন।
সুরোজের দাবি, শুধু রাজনীতিতে অসীম আগ্রহ থাকাতেই পলিটিকাল সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করছেন। বছর চব্বিশের যুবক এখন পলিটিক্যাল সায়েন্সে মাস্টার্স করছেন। তাঁকেই এবার করা হয়েছে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বামেদের প্রার্থী।
লড়াই কঠিন, তবু ‘দাদাগিরি’ দেখাবেনই:
রাজনীতি ছাড়া সুরোজের তীব্র আকর্ষণ ক্রিকেটে। তবে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা নন, ২৪ বছরের এই যুবক ‘দাদা’ সৌরভ গাঙ্গুলির ফ্যান। ভোটের ময়দানে পারবেন দাদাসুলভ লড়াই করতে?
লাজুক হেসে সুরজের বলছেন, “আমি জানতামই না যে প্রার্থী হব। তবে শাখা কমিটি থেকে আমার নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। মন তখনই শক্ত করে নিয়েছিলাম। একদিন অশোক জেঠু ডেকে বলল, বাড়ি বাড়ি প্রচার আর দলের কথা তুলে ধরতে হবে। বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়তে হবে। লড়াই থেকে পিছিয়ে যাওয়া চলবে না। মনস্থির করে লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হবে। এর পর আজ তালিকায় আমার নাম স্থানীয় প্রার্থী হিসেবে প্রকাশ করা হয়”।
শিলিগুড়িতে পৌর নিগমের দশ নম্বর ওয়ার্ডটি এতদিন বামেদেরই দখলে ছিল। ওই ওয়ার্ড থেকেই নির্বাচিত কাউন্সিলর কমল আগরওয়াল ছিলেন মেয়র পারিষদ। তবে এখন তিনি তৃণমূলে। শাসক দলের হয়ে প্রার্থী হবেন হেভিওয়েট কমল। তাঁর দলত্যাগের পর ওই ওয়ার্ডে বামেদের লড়াই এবার হাড্ডাহাড্ডি হবেই। তবে খেলার আগেই ভয় পেতে রাজি নন সৌরভ-ভক্ত সুরোজ। লড়াই তো কঠিন হবেই, হাল ছাড়া চলবে না, বলছেন তিনি।
অবসর সময়ে ছাত্র পড়ান সুরোজ। আর তার সঙ্গে দলের কাজে নিরন্তর লেগে থাকেন। দলের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা দেখেই টিকিট দিয়েছে সিপিএম। আর সুরোজ বলছেন, “শাসক দলের বঞ্চনা তুলে ধরে সৌরভ গাঙ্গুলির মতো ছক্কা হাঁকাব। মানুষের পাশে ছিলাম, আছি থাকব।”
সঙ্গে আরও যোগ করেন,”আমরা ক্ষমতালোভী নই। তাই এখনও সিপিএমেই আছি। আশা করি, যারা ক্ষমতার জন্য দলত্যাগ করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে মানুষ আমায় আশীর্বাদ করবেন”। নিশানা যে লাল ছেড়ে ঘাসফুলে যাওয়া কমলবাবুকে তা বলাই বলাই বাহুল্য। এখন দেখার কমলের বিরুদ্ধে লড়ে তিনি বাম দুর্গ অক্ষত রাখতে পারেন কিনা।