বালুরঘাট: বিতর্ক আগে থেকেই ছিল। মেলেনি প্রশাসনের অনুমতিও। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই ‘বিতর্কিত’ পুজোর শুভ উদ্বোধন করে খ্যাতনামা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী ও বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সুকান্ত মজুমদার। মহালয়ার দিনই বালুরঘাটের নিউটাউন ক্লাবের পুজোর হওয়ার একদিন পরেই দুষ্কৃতী হামলা হয় ক্লাব সম্পাদক অরজিৎ মহন্তের উপর। ফলে পুজো বিতর্কের ইস্যুতে কার্যত ঘৃতাহুতি হয়েছে। সোমবার গভীর রাতে অরজিৎ মহন্ত বাড়ির বাইরে নোংরা ফেলতে এলেই তার উপর দুষ্কৃতী হামলা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তবে অল্পের জন্য পানে রক্ষা পান তিনি। হামলা থেকে বাঁচতে চিৎকার করে ওঠেন তিনি। সেই আওয়াজে স্থানীয়রা ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে।
এ দিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বালুরঘাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। কাউকে গ্রেফতার করা না গেলেও একটি মোটরবাইক উদ্ধার করে তারা। মঙ্গলবার দুপুরে বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আক্রান্ত ক্লাব সম্পাদক।
গত বালুরঘাট পুরসভা নির্বাচনে ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী অরজিৎ মহন্ত। সক্রিয় গেরুয়া শিবিরের কর্মী তিনি। এরপর তাঁর পুজোয় অনুমতি না মেলা, বিতর্ক, শীর্ষ নেতাদের দিয়ে উদ্বোধন, সবকিছুকে এক সুতোয় বাঁধতে চাইছে বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার বলেন, ‘কারা হামলা চালিয়েছে তা খুঁজে বের করুক পুলিশ। এমন নোংরা রাজনীতি বালুঘাটের মানুষ এর আগে কোনওদিন দেখে নি।’
অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর সুভাষ চাকির দাবি, হপ্তা তোলা নিয়েই নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল বাঁধে। এই ঘটনা তারই জের। তিনি বলেন, ‘বিজেপির একটা বড় দোষ সব সময় তারা অসত্য কথা বলে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোন বিষয় নেই।’ হামলায় রাজনৈতিক বাক্যবাণ পুরোদস্তুর চললেও জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, ‘এনিয়ে এখনও কোনও অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে৷’
অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ক্লাব সম্পাদকের উপর হামলার ঘটনায় আগেই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই নিউটাউন ক্লাবের পুজোকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। বিজেপির রাজ্য সভাপতির খাস তালুক বালুরঘাটে একমাত্র পূজা প্যান্ডেল যেখানে তিনি মিঠুন চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে উদ্বোধন করেছিলেন। বিজেপি ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই ক্লাবের উপর এইরকম আক্রমণ বলে মনে করছেন ক্লাব কর্মকর্তারা।
অপরদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে মিঠুন চক্রবর্তী নিউ টাউন ক্লাবের পূজা উদ্বোধন করতে আসছে শুনে প্রথম থেকেই শাসক দল ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষের উপরে বলে অভিযোগ। প্রথমে সার্কিট হাউজ না দেওয়া তারপর সুকান্ত মজুমদার ও মিঠুন চক্রবর্তীর পোস্টার ছেড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম চাপ দেওয়া হচ্ছিল তাদের ওপর। গতকাল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দারাই করানো হয়েছে দাবি বিজেপির।