বালুরঘাট: বিজেপির শাখা সংগঠন কিষান মোর্চার মণ্ডল সভাপতিদের তালিকায় নাম উঠে এসেছে তৃণমূলের শ্রমিক নেতার। আর এই নামকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে যাবতীয় বিতর্ক। তালিকাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের রাজনীতিতে। বিজেপির কিষান মোর্চার বালুরঘাট শহর মণ্ডলের সভাপতি হিসেবে নাম রয়েছে মুকুল মহন্তের। বিষয়টি জানাজানি হতেই জেলা জুড়ে বির্তক তৈরি হয়েছে। কেন? কারণ, যাঁর নাম নিয়ে বিতর্ক, সেই মুকুল মহন্তর দাবি, তিনি কোনওদিনই বিজেপি করেননি। অথচ, তাঁর নাম বিজেপির নেতৃত্বের তালিকায় কেন থাকল, তা তাঁর বোধগম্য হচ্ছে না। তৃণমূল দলের কাছে তাঁকে বিপদে ফেলতেই এমন কাণ্ড করা হয়েছে বলেই অভিযোগ করেছেন মুকুলবাবু। যদিও জেলা বিজেপির দাবি, মুকুল মহন্ত বিজেপি করতেন। সেই জন্য তাঁর নাম রাখা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ভারতীয় জনতা কিষান মোর্চার মণ্ডল সভাপতিদের নামের তালিকা ঘোষিত হয়। জেলার মোট ১৮ টি জেলা পরিষদ মণ্ডল ও তিনটি শহর মন্ডল রয়েছে। এর মধ্যে ১৭ টি জেলা পরিষদ ও একটি শহর মণ্ডলের সভাপতিদের নামের তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। তালিকায় বালুরঘাট শহর মণ্ডল কমিটির সভাপতি হিসেবে মুকুল মহন্তের নাম ও ফোন নম্বর রাখা হয়েছে। যদিও কিষান মোর্চার লিস্টে মুকুল মহন্তের পদবী ‘দত্ত’ করা হয়েছে। তবে ফোন নম্বর ঠিক রয়েছে।
মুকুল মহন্ত বলেন, “আমি তো তৃণমূল করি। আমি তো তৃণমূলের সংগঠনে আছি। আমি তো বিজেপি করি না। কেউ হয়ত আমার নাম দিয়ে দিতে পারে। আমি আইএনটিটিইউসি করি, এলাকায় (তৃণমূলের) কৃষক সংগঠনেও আছে আমার নাম।”
মুকুলবাবু উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার বালুরঘাট ডিপোর কর্মী। তিনি সেখানে সক্রিয়ভাবে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি করেন বলে জানা গিয়েছে। এমন একজন তৃণমূল কর্মীর নাম বিজেপির শাখা সংগঠনের নেতৃত্বের তালিকায় রাখাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলার রাজনীতিতে। এমন খবর জেনে নিজেও অবাক বলে দাবি করেছেন মুকুল মহন্ত নামে ওই ব্যক্তি।
এই বিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, “মুকুল মহন্ত বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তার প্রমাণ রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস বিভিন্নভাবে বিজেপি কর্মীদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। চাপে পড়েই তিনি হয়ত বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। অবশ্য তিনি যদি ওই পদে থাকতে না চান, পরবর্তীতে ওই পদে অন্য নাম বিবেচনা করা হবে।” অন্যদিকে এই বিষয়ে বালুরঘাট শহর তৃণমূলর কো-অর্ডিনেটর সুভাষ চাকী বলেন, “কোনও চাপ সৃষ্টির বিষয় নেই। মুকুল মহন্ত তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। তিনি তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির সক্রিয় কর্মী। বিজেপি দল ভাঙানোর খেলায় নেমেছে।”