দক্ষিণ দিনাজপুর: রাজ্যে যে হারে কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে তা মোকাবিলায় রবিবারই একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে নবান্নের তরফে। স্কুল কলেজ আবারও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। লোকাল ট্রেন কিংবা মেট্রো সোমবার থেকে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলবে। লোকাল ট্রেন সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে আর চলাচল করবে না। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব হল বিজেপি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এদিন প্রশ্ন তোলেন, সন্ধ্যা ৭টার পর লোকাল ট্রেন বন্ধ হয়ে গেলে কীভাবে অফিস থেকে মানুষ বাড়িতে ফিরবেন? একই সঙ্গে সরকারকে তুলোধনা করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও। তাঁর প্রশ্ন, অ্যালেন পার্কে মুখ্যমন্ত্রীর লোক জড়ো করার কী দরকার ছিল?
রবিবার বিকেলে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর থানার ফুলবাড়ি এলাকায় বিজেপির কিষাণ মোর্চার অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেখানেই রাজ্য সরকারের তরফে জারি করা নতুন বিধিনিষেধের সমালোচনা শোনা যায় তাঁর মুখে। সুকান্ত মজুমদার বলেন, “গোটা ভারতবর্ষেই ওমিক্রনের বিপদ। সেই বিপদের আঁচ পেয়ে বিভিন্ন রাজ্য ২৫ ডিসেম্বর, বর্ষবরণ উদযাপনে যে ভিড় হয় তা মোকাবিলায় আগাম ব্যবস্থা নিয়েছিল। দুর্ভাগ্যের বিষয় এ রাজ্যের সরকারের যখন কঠোর পদক্ষেপ করার কথা ছিল তারা তা করেনি। এখন অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। বাংলায় কথা আছে চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে, আমাদের রাজ্য সরকারেরও অবস্থা তেমনই।”
রবিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ঘোষণা করেন, সোমবার থেকে সন্ধ্যা ৭টা অবধি লোকাল ট্রেন চলাচল করবে। এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ যাত্রী থেকে বিরোধী দলগুলি। সন্ধ্যাবেলাই যদি ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে অফিসকাছারি থেকে যাঁরা বাড়ি ফিরবেন, তাঁরা কীভাবে ফিরবেন। একই প্রশ্ন তুলে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এতে অফিসযাত্রীদের খুবই সমস্যা হবে। সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয় ট্রেন চালাবে না, তা হলে তার বদলে অন্য কোনও ব্যবস্থা তো করতে হবে।” তবে স্কুল কলেজ খোলা প্রসঙ্গে সুকান্তের প্রতিক্রিয়া, “স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেই রাজ্য সরকার নিশ্চয়ই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে মেনে চলব। কিন্তু আমার মত, দেরি হয়ে গিয়েছে। অনেক আগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ ছিল।”
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও এদিনের নির্দেশিকা প্রসঙ্গে বলেন, কেন সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের এতটা সময় লাগল সেটাই প্রশ্ন। সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “সন্ধ্যা ৭টার পর সব বন্ধ থাকবে। ট্রেন ৫০ শতাংশ লোক নিয়ে চলবে। এর আগেও আমরা দেখেছি কার্যত বাদুড় ঝোলা হয়ে মানুষ ফেরেন। মানুষকে তো বিপন্নতা সঙ্গে নিয়ে চলতে হয়। গরীব মানুষ যাঁরা, তাঁদের জন্য বিকল্প কোনও ব্যবস্থা আছে? মুখ্যমন্ত্রীর কী দরকার ছিল অ্যালেন পার্কে জমায়েতের? কেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস বলে ১ জানুয়ারি জায়গায় জায়গায় মোচ্ছব হয়েছে?”
আরও পড়ুন: Duare Sarkar: বাতিল নয় দুয়ারে সরকার! কবে থেকে, দিনক্ষণ ঘোষণা নবান্নের