বালুরঘাট: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের নতুন কমিটি ঘোষণার পর বিতর্ক দেখা দিয়েছে তৃণমূলেরই অন্দরে। অভিযোগ উঠেছে, যাঁরা পুরনো কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন এমন অনেকেই নতুন কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়নি। বিগত নির্বাচনে নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন এমন একজনকে তৃণমূলের নতুন কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছে দলেরই একাংশ। এদিকে নতুন জেলা কমিটিতে সভাপতির স্বাক্ষর থাকলেও স্বাক্ষর নেই চেয়ারম্যানের। লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে জেলা তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা জুড়ে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। এই প্রেক্ষিতেই জেলা কমিটিতে আরও কিছু নাম সংযোজন করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা কুমারগঞ্জের বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডলের অভিযোগ, তাঁকে অন্ধকারের রেখেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বকে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি পরিবর্তন হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর। নতুন পদে এসেছেন সুভাষ ভাওয়াল। বর্তমান জেলা সভাপতি মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ বলে জেলায় পরিচিতি রয়েছে। বৃহস্পতিবার ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল তাঁর নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করেন। নতুন জেলা কমিটিতে রাখা হয় মাত্র ৫৯ জনকে। যেখানে পূর্বে ১০৯ জন সদস্যকে নিয়ে জেলা কমিটি তৈরি করেছিলেন তৎকালীন জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার।
নতুন এই জেলা কমিটি প্রকাশ্যে আসতেই গোটা জেলা জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চেহারাটা ফের প্রকাশ্যে এসে গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ওপেন ফোরামে স্পষ্টতই বিরোধিতা শুরু করেন তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশের কর্মী-সমর্থকেরা। কুমারগঞ্জের বিধায়ক তথা বর্তমানে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তোরাফ হোসেন মণ্ডল ফোনে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁর কাছে কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি নতুন কমিটির ব্যাপারে। এমনকি তাঁকে জানানোও হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি মৃণাল সরকার বলে, নতুন কমিটিতে চেয়ারম্যানের সই না থাকায় এবং লোকসভা ভোটের আগে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আগের কমিটির দ্বায়িত্বে থাকা বহুজনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যাদের নাম থাকা উচিত ছিল বলেই মনে হয়।
খোঁচা দিতে ছাড়েনি পদ্ম শিবির। এ বিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, তৃণমূলের জেলা কমিটি নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে তৃণমূল এখন তোলামূলে পরিণত হয়েছে। যারা তোলা দিতে পারবে তাঁরা কমিটিতে থাকবে।
যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল বলেন, যারা বাদ দিয়েছেন তাঁদের খারাপ লাগতেই পারে। তবে জেলা কমিটি ছোট করে গঠন করা হয়েছে যাতে অন্যান্যদের ব্লক বা অন্যান্য পদে দায়িত্ব দেওয়া যায়। প্রয়োজন হলে আলোচনার মাধ্যমে কমিটিতে সংযোজন করা হতে পারে।