South Dinajpur: রাত হলেই নূপুরের আওয়াজ, ভূতের ভয়ে আত্মারাম খাঁচাছাড়া এই স্কুলের ছাত্রীদের
South Dinajpur: ছাত্রীদের বক্তব্য, "গত ১ এপ্রিল থেকে এমন হচ্ছে। আমরা রাতে ভয়ে ঘুমোতে পারছি না। হস্টেলে থাকতে ভয় করছে। আমরা বাড়ি চলে যাব।"

বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিভাবকদের উপস্থিতিতে হস্টেল ছেড়ে বেরিয়ে যায় অনেক ছাত্রী। এমন অবস্থা দেখে স্কুল কর্তৃপক্ষ পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের দক্ষিণ দিনাজপুর শাখার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পাশাপাশি অনগ্রসর শ্রেণি দফতরেও খবর পাঠান। ঘটনা জানার পরই বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা ওই স্কুলে গিয়ে সচেতনতামূলক শিবিরের আয়োজন করেন। শিবিরের মাধ্যমে ছাত্রীদের ভীতি দূর করার চেষ্টা করা হয়। তারপরও হস্টেল ছাড়ার হিড়িক পড়েছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন।
জানা গিয়েছে, বালুরঘাট ব্লকের কালিকাপুর হাইস্কুলের সঙ্গেই আদিবাসী ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথক হস্টেল রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১২০ জন আবাসিক পড়ুয়া রয়েছে। তবে ভূত আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ছাত্রীদের হস্টেলে। ওই হস্টেলে প্রায় ৭০ জন ছাত্রী রয়েছে। ওই হস্টেলেই নাকি অশরীরী আত্মারা ঘুরে বেড়াচ্ছে।
স্কুল সূত্রে খবর, স্কুলের কয়েকজন ছাত্রী গত কয়েকদিন ধরেই অস্বাভাবিক আচরণ করছে। ছাত্রী এবং গ্রামবাসীদের ধারণা, স্কুলে নাকি ভূত রয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কে হস্টেলে কোন ছাত্রী রাতে আর ঘুমোতে পারছে না। তাদের ক্রমাগত শরীর খারাপ হয়ে পড়ায়, এদিন বিদ্যালয়ে নানা সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বিজ্ঞান মঞ্চ, অনগ্রসর জাতি কল্যাণ দফতরের প্রতিনিধি এবং পঞ্চায়েত সদস্যরা ওই বিদ্যালয়ে যান। অভিভাবক ও পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে এই ভীতি কাটানোর চেষ্টা করেন। এরপরও ভূত আতঙ্কে ওই হস্টেলে কেউই থাকতে চাইছে না।

হস্টেল ছেড়ে চলে যাচ্ছে ছাত্রীরা
ছাত্রীদের বক্তব্য, “গত ১ এপ্রিল থেকে এমন হচ্ছে। আমরা রাতে ভয়ে ঘুমোতে পারছি না। হস্টেলে থাকতে ভয় করছে। আমরা বাড়ি চলে যাব।”
হস্টেলে ভূতের বিষয়টি খারিজ করে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের বক্তব্য, অশরীরী বা ভূত বলে কিছু হয় না। তার বৈজ্ঞানিক কারণ ছাত্রীদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। হ্যালুসিয়েশন বা ভ্রম সম্পর্কেও অবহিত করা হয়েছে।
হস্টেলের ইনচার্জ শ্যামলিকা তপ্নো সরেন বলেন, “বাইরে রাতে নানা আওয়াজ হয়। ছাত্রীরা ভয় পেয়েছে। গতকাল কয়েকজন ছাত্রী ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা তাদের বুঝিয়েছি। এত ভয় পেলে হবে না।”
ছাত্রীদের এই ভূতের ভয় নিয়ে স্কুলের টিচার ইনচার্জ সুভাষচন্দ্র বর্মণ বলেন, “মাসখানেক আগে সমস্যাটা শুরু হয়। স্কুল ছুটির পর মেয়েরা ভূতৃ-ভূত খেলছিল। সেইসময় একটা মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অজ্ঞান হয়ে যায়। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার পর সেদিনই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, মেয়েটির নার্ভের সমস্যা রয়েছে।” কিন্তু, গত ১ এপ্রিল থেকে হস্টেলে যে সমস্যা হচ্ছে, তা তিনি একদিন আগেই জেনেছেন বলে জানালেন টিচার ইনচার্জ। তবে অভিভাবকরা চাইলে কয়েকদিনের জন্য ছাত্রীদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারেন বলে তিনি জানান।

