বালুরঘাট : বালুরঘাট পুরসভার (Balurghat Municipality) সার্ভার রুমে আগুন। শনিবারের এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। আগুন লাগার খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে আসে দমকলের দুটি ইঞ্জিন। দমকলকর্মীদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, এসি মেশিনের শর্ট সার্কিটের কারণে সার্ভার রুমে আগুন লাগে। তবে বিরোধীরা ইতিমধ্যেই বিষয়টিকে নিয়ে আক্রমণ সুর চড়াতে শুরু করে দিয়েছে। আগুন লাগার ঘটনায় বড়সড় চক্রান্তের তত্ত্ব খুঁজে পাচ্ছে বিরোধী দলগুলি। তাদের বক্তব্য, বালুরঘাট (Balurghat) পুরসভার বিগত বোর্ডের দুর্নীতি ধামাচাপা দিতেই সার্ভার রুমে আগুন লাগানো হয়েছে।
আগুনে কী কী ক্ষতি হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয় পুরসভার কাছে। কিন্তু এই আগুন লাগার ঘটনাকে নিছক সাধারণ দুর্ঘটনা বলে মানতে নারাজ বিরোধীরা। তারা এই আগুন লাগার পেছনে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে। কারণ বিগত সাত আট বছরের পুরানো পুরবোর্ডের রেকর্ড দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সেই রেকর্ড মুছতেই এবং সেই দুর্নীতির তথ্য যাতে আর জনসমক্ষে না আসে তার জন্যই হয়ত এই আগুনের চক্রান্ত। এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে বিরোধীরা। এদিকে আগুন লাগার ফলে সার্ভার রুমের তথ্য কতটা সুরক্ষিত আছে, তাও এখনও স্পষ্ট নয়। এছাড়াও জন্ম মৃত্যুর নথি এবং অন্যান্য অনেক তথ্যও নষ্ট হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এদিকে ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বাম ও বিজেপি নেতারা। যদিও চক্রান্তের কথা অস্বীকার করেছেন পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক কুমার মিত্র।
এদিকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পুরোপুরি না জানা গেলেও আগুনের জেরে বেশকিছু জাতিগত শংশাপত্র পুড়ে গিয়েছে। যদিও পুরকর্মীদের তৎপরতায় কিছুটা সরিয়ে ফেলা সম্ভব হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বালুরঘাট থানার পুলিশ ও দুটি দমকলের ইঞ্জিন। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু সার্ভার রুমে প্রধান সার্ভার পুড়ে যাওয়ায় পুরসভার অন্যান্য বেশির ভাগ কম্পিউটারে অকেজো হয়ে পড়ে।যদিও পুরসভার দাবি, পুরনো নথির ব্যাক আপ রাখা হয়েছে। কিন্তু নথি মুছে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
সিপিআইএম নেতা তথা প্রাক্তন বাম কাউন্সিলর অরিজিৎ চন্দ এই বিষয়ে বলে বলেন, “এই আগুনের ঘটনা আমাদের কাছে সাধারণ বলে মনে হচ্ছে না। বেছে বেছে সার্ভার রুমেই আগুন লাগল কেন? সম্ভবত দুর্নীতিতে ভরা পুরসভার পুরনো রেকর্ড মুছে ফেলতেই এই অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এই বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানাই।”
এবিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, “বিগত আট বছর ধরে পুরসভা যে দুর্নীতি করেছে। যে দুর্নীর নথি মুছে ফেলতেই এই আগুন লাগানো হয়েছে। এর সঙ্গে বড় কোনও চক্রান্ত রয়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক তদন্তের দাবি জানাব।”
অন্যদিকে এ বিষয়ে বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, “বিরোধীরা সবেতেই চক্রান্ত খোঁজে। এখানে কোন চক্রান্ত বা অন্যকিছুই নেই। এটা একটা সাধারণ ঘটনা। তবে বড় আগুন লাগার আগেই পুরসভার কর্মী ও দমকলের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিছু সংশাপত্র নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, কম্পিউটারে রাখা পুরনো তথ্য ব্যাকআপ রাখা হয়েছে। তবুও সবরকমভাবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।”
আরও পড়ুন : Maoists in West Bengal: রাজ্যে মাওবাদী বলে কিছু নেই, দাবি করলেন মন্ত্রী