বালুরঘাট : বিদ্যুৎহীন বালুরঘাট (Balurghat) জেলা হাসপাতাল। যার ফলে প্রায় দিনভর বন্ধ রইল আল্ট্রা সোনোগ্রাফি পরিষেবা। সেই সঙ্গে বন্ধ থাকল সিটি স্ক্যান সহ অন্যান্য পরিষেবাও। বিদ্যুৎ বিভ্রাট তো রয়েছেই, তার উপর হাসপাতালের জেনেরেটরও বিকল হয়ে পড়েছে। যার ফলে দিনভর চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হতে হল আমজনতাকে। বহু গর্ভবতী প্রসূতি রোগীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেল। বালুরঘাট হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ ইউএসজি পরিষেবা বন্ধ থাকায় চরম হয়রানির মুখে পড়েছেন রোগী ও আত্মীয় পরিজনেরা। ঘটনার জেরে শনিবার বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল চত্বরে রোগী পরিজনদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। যদিও পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার।
বালুরঘাট হাসপাতালে পুরানো ভবনে আলট্রা সোনোগ্রাফি ও সিটি স্ক্যান বিভাগ রয়েছে। যেখানে হাসপাতালের রোগীরা তো বটেই, এছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীরা পরিষেবা নিতে আসে। হাসপাতালে জেনেরেটর থাকলেও তা বিকল হয়ে পড়েছে। এদিকে হাসপাতালে নতুন ওয়ার্ডের কাজ চলছে। যার ফলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। শনিবার সকাল থেকেই বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের পুরানো ভবনে আলট্রা সোনোগ্রাফির ভিড় দেখা যায়। ভিড়ের মধ্যে বেশিরভাগই প্রসূতি। এছাড়া সিটি স্ক্যানও বন্ধ ছিল। দুপুর ২ টা পর্যন্ত এই পরিষেবা দেওয়া হয়। পরিষেবা দেওয়ার সময় পর্যন্ত কোনওরকম বিদ্যুৎ পরিষেবা ছিল না বলেই জানা গিয়েছে। অনেকেই হাসপাতাল থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হন। ব্যাপক হয়রানির সম্মুখীন হন গর্ভবতী সহ রোগীর পরিজনরা।
এ বিষয়ে পতিরাম থেকে আসা এক প্রসূতির আত্মীয় মিনাক্ষী পাল বলেন, “সকাল থেকে বালুরঘাট হাসপাতালে প্রসূতি রোগীকে নিয়ে বসে রয়েছি। এখানে আল্ট্রা সোনোগ্রাফি হচ্ছে না। কয়েক ঘণ্টা থাকার পরে অবশেষে হাসপাতাল থেকে জানিয়েছে, সোমবার আসতে। এখন রোগীকে নিয়ে ফের বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে। জেলা হাসপাতালেই যদি এমন পরিষেবা হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাব?”
আশিস সরকার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গেও কথা হয়। তাঁর স্ত্রী গর্ভবতী। আশিস বাবু বলেন, “ইসিজি করাতে নিয়ে এসেছিলাম হাসপাতালে। এখানে দীর্ঘক্ষণ ধরে বসে থাকার পর জানতে পারি বিদ্যুৎ নেই। যার কারণে ইসিজি বন্ধ রয়েছে।” শুধুমাত্র এক তিনি নন, অনেক মানুষ এসে খালি হাতে ঘুরে যান।
অন্য দিকে এ বিষয়ে বালুরঘাট হাসপাতালের সুপার পার্থসারথি মণ্ডল বলেন, হাসপাতালের উচ্চমাত্রা যুক্ত বিদ্যুৎবাহী তারের কাজ চলছে। যার ফলে সাময়িকভাবে হাসপাতালে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে জেনেরেটরটাও খারাপ হয়েছে। হাসপাতালের কর্মীদের সেখানে পাঠিয়ে পুরো পরিষেবা দ্রুত দেওয়া চেষ্টা করা হচ্ছে।”
পরে অবশ্য বিকেলের দিকে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয় হাসপাতালে। কিন্তু সকাল থেকে এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে কার্যত চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হন রোগীর পরিজনেরা।