বালুরঘাট : স্কুলে সময় মত আসেন না ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা। এক দুদিন নয়। এমন ঘটনা নিত্যদিনের বলেই মনে অভিযোগ অভিভাবক থেকে স্থানীয়দের। এদিকে ওই স্কুলে দিন দিন কমছে পড়ুয়ার সংখ্যা। বুধবার সকাল সাড়ে এগারোটার পর বালুরঘাট (Balurghat) ব্লকের অমৃতখন্ড কলোনী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে দেখা গেল হাতেগোনা কয়েকজন পড়ুয়া স্কুলে রয়েছে। অভিভাবকদের আরও অভিযোগ, প্রধান শিক্ষিকা সময় মতো স্কুলে না আসায় দেরিতে রান্না হচ্ছে মিড ডে মিল। অসুস্থতার কারণে স্কুলে যেতে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মাধবী সাহা। যদিও এ কথা শুনেও সন্তুষ্ট হননি অভিভাবকরা। ইতিমধ্যেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ডিপিএসসির চেয়ারম্যান সন্তোষ হাঁসদা।
জানা গিয়েছে, অমৃতখন্ড কলোনি প্রাথমিক স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা সব মিলিয়ে ১২ জন। সব মিলিয়ে দুজন শিক্ষক স্থায়ী ও একজন ডেপুটেশনে আসা শিক্ষক রয়েছেন। কিছু দিন আগে পর্যন্ত স্কুলের দুজন শিক্ষিকা ছুটিতে ছিলেন। তবে এখন তিনজনই কাজে যোগদান করেছেন। অভিযোগ, এই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সময়মত স্কুলে আসেন না। দীর্ঘদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে এই ছবি। তিনি সময় মত স্কুলে আসছেন না। ফলে মিড ডে মিলের রান্নাতেও হচ্ছে দেরি। অভিভাবক থেকে স্থানীয়দের অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মাধবী সাহা সাড়ে বারোটা একটার আগে কোনওদিনও স্কুলে আসেন না। যে কারণে ধুঁকছে স্কুলের পঠনপাঠন। স্কুলের সহ-শিক্ষিকা স্বীকার করে নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার দেরিতে আসার কথা। এদিন সাড়ে ১১ টার পর স্কুলে গিয়ে দেখা গেল মাত্র ৬ জন পড়ুয়া স্কুলে এসেছে।
এদিন সাড়ে বারোটা নাগাদ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মাধবী সাহাকে বালুরঘাটের আর্য্য সমিতি পাড়ায় তাঁর বাড়িতেই পাওয়া গেল। ভর দুপুরে তিনি তিনি স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন। দেরিতে স্কুলে রওনা হওয়ার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই তিনি জানান তিনি অসুস্থ। তিনি বলেন, ডিসেম্বর মাসের প্রথমের দিকে তাঁর পা ভেঙে যায়। তারপর থেকে তিনি ছুটিতে ছিলেন। বর্তমানে তার ছুটি শেষ হয়ে গেলেও, এখনও অসুস্থ রয়েছেন তিনি।
যদিও গ্রামবাসী নীহার সরকার ও অভিভাবক সুজিতা কুন্ডু দাস বলেন, শুধুমাত্র এখন নয়, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি নিজের ইচ্ছামতো সময়ে স্কুলে আসেন। এই শিক্ষিকার জন্য স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। ওই স্কুল শিক্ষিকার জন্য অনেক দেরিতে মিড ডে মিলের রান্না হয়। পুরো প্রশাসনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। অন্যদিকে এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সন্তোষ হাঁসদা জানান, ওই স্কুলের বিষয়টি তাঁর নজরে রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অসুস্থ রয়েছেন বলে তাঁর কাছে খবর রয়েছে বলে তিনিও জানেন। সে কারণেই একজন অতিরিক্ত শিক্ষককে ডেপুটেশন ভিত্তিতে ওই স্কুলে পাঠানো হয়েছে, যাতে পঠন পাঠনে সমস্যা না হয়। তাও পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন তিনি৷