তপন : বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের (Extramarital Affair) প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে পুড়িয়ে খুনের (Murder) অভিযোগ উঠল স্বামী-সহ শ্বশুর বাড়ির অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন থানার ক্ষীরট্টা এলাকায়। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তপন থানার পুলিশ। সূত্রের খবর, প্রায় বছর ছয়েক আগে ক্ষীরট্টার নয়ন্ত বর্মনের সঙ্গে বিয়ে হয় পলি বর্মনের (২৬)। সম্প্রতি স্বামীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জেনে ফেলেছিলেন পলি দেবী। তারপর থেকে চলছিল দাম্পত্য কলহ। অভিযোগ, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে কিছু বললেই স্ত্রীর উপর চড়াও হতেন স্বামী। তবে অশান্তি চরমে ওঠে নতুন বছরের শুরুতে। রবিবার স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করেন নয়ন্ত। এরপর তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দারাই ওই গৃহবধূকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং পরে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাতেই মারা যান তিনি। পলি দেবীর এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। সোমবার তপন থানার পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায়৷ পলি দেবীর বাপের বাড়ির সদস্যদের অভিযোগ তাঁদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানায় তাঁদের মেয়ে ইলেক্ট্রিক শক খেয়েছে। কিন্তু, হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন মেয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। এ নিয়ে তপন থানায় জামাই সহ তাঁর মা-বাবার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে মৃতার বাপের বাড়ির তরফে।
তাঁদের প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও তুলেছেন পলি দেবীর পরিবারের সদস্যরা। তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক মূল অভিযুক্ত নয়ন্ত। পলাতক তাঁর মা। ঘটনা প্রসঙ্গে মৃত গৃহবধূর আত্মীয় সুচিত্রা বর্মন বলেন, “জামাইয়ের সঙ্গে অন্য মেয়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অশান্তি চলছিল। রবিবার আমরা হঠাৎ জানতে পারি, আমাদের মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আমাদের অনুমান জামাই ও ওই বাড়ির সদস্যরা মিলে আমাদের মেয়েকে মেরে ফেলেছে।” মৃতার আরেক আত্মীয় আদিত্য সরকার বলেন, “ওই পরিবার থেকে আমাদের প্রথমে জানানো হয় ইলেক্ট্রিক শক খেয়েছে। কিন্তু পরে দেখি অন্য ঘটনা। আমরা এবিষয়ে তপন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আমাদের অনুমান ওরা মারধর করে গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।”