এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল, উত্তপ্ত গঙ্গারামপুর

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Sep 04, 2021 | 9:53 PM

TMC Clash: গঙ্গারামপুরে শাসকশিবিরের গোষ্ঠীকোন্দল এই প্রথম নয়। সম্প্রতি, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসেই অনুষ্ঠান পালনকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য়ে শাসক শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দল। ডিমভাত খাওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বালুরঘাট পৌরসভা এলাকা

এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল, উত্তপ্ত গঙ্গারামপুর
আক্রান্ত দ্বিজেন দেব সিংহ, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

দক্ষিণ দিনাজপুর: এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্য়ে তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠী সংঘর্ষ। ঘটনায় আহত এক তৃণমূল কর্মী। গঙ্গারামপুর শুকদেবপুর মালিপাড়া এলাকার ঘটনা। আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী গুরুতর জখম অবস্থায় মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন। জানা গিয়েছে আহত তৃণমূল কর্মীর নাম দ্বিজন দেব সিংহ। হামলার ঘটনায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

এলাকায় ‘বিপ্লবঅনুগামী’ বলেই পরিচিত তৃণমূল (TMC) কর্মীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফেরার পথে তাঁদের উপর অতর্কিতে হামলা চলে। আক্রমণের জেরে মাথা ফাটে এক তৃণমূল কর্মীর বলে অভিযোগ। শুক্রবার ফের উভয়পক্ষে বচসা শুরু হয়। ‘গৌতমঅনুগামী’-দের অভিযোগ হামলার ঘটনায় দ্বিজেন দেব সিংহ আহত হন। তাঁর উপর রড, লাঠি দিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় তিনটি বাইক ফেলে ওই দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়।

‘মন্ত্রীঘনিষ্ঠ’ এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, “বৃহস্পতিবার রাতে দ্বিজেনরা রাস্তার ধারে নেশা করছিল। আমরা রাতে ফেরার সময়ে আমাদের রাস্তা আটক করে ওরা হুমকি দেয় তৃণমূল করতে হলে ওদের সঙ্গেই করতে হবে। নয়ত আমাদের এলাকাছাড়া করা হবে। আমরা জিজ্ঞেস করি কেন আমরা তৃণমূল করতে পারব না, কিন্তু আমাদের কথা না শুনেই আমাদের উপর পাল্টা হামলা চালানো হয়। ঋজু সরকার নামে আমাদের এক কর্মীর বাইকও কেড়ে নেওয়া হয়। আমাদের এক কর্মীর মাথা ফাটে। দ্বিজেনের গায়ে কেউ হাত দেয়নি। অত্যন্ত নেশা করে থাকায় রাস্তায় পড়ে গিয়ে ওঁর মাথা ফেটে যায়।”

পাল্টা, গৌতম অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত তৃণমূলের অপর গোষ্ঠীর এক পঞ্চায়েত নেতৃত্বের কথায়, “দ্বিজেনরা যখন বাড়ি ফিরছিল তখন বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী বাইকে এসে হামলা চালায়। মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে কুড়ুলের বাঁট দিয়ে আঘাত করে। আচমকা হামলায় গুরুতর জখম হয় দ্বিজেন। তারপর বাইক ফেলে পালিয়ে যায়।”

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরে গঙ্গারামপুরে তৃণমূলের দুই শিবিরে গোষ্ঠীকোন্দল চলছিল। রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের সঙ্গে জেলার প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি গৌতম দাসের সঙ্গে বিরোধ নতুন  নয়। দীর্ঘদিন ধরেই তা হয়ে আসছে বলেই দাবি করেন স্থানীয়রা। জেলা তৃণমূলের অভ্যন্তরেও কর্মীরা যে এই বিষয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল তা প্রকারান্তরে অস্বীকার করেননা কেউই। শনিবার ফেলে যাওয়া বাইকগুলি ভাঙচুর করে ক্ষিপ্ত জনতা। অবস্থা বেগতিক বুঝে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ।

তবে, গঙ্গারামপুরে শাসকশিবিরের গোষ্ঠীকোন্দল এই প্রথম নয়। সম্প্রতি, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসেই অনুষ্ঠান পালনকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য়ে শাসক শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দল। ডিমভাত খাওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বালুরঘাট পৌরসভা এলাকা। সংঘর্ষে জখম হয় একাধিক। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের (TMC) দলীয় কোন্দল কেবল সর্বজনবিদিত নয়, দীর্ঘদিনেরও। শঙ্কর চক্রবর্তীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিবাদ প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের। কারণ, দলে যোগদানের পর তাঁকে কোনও বড় পদ দেওয়া হয়নি দলের তরফ থেকে। তৃণমূলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় শঙ্করকে সরিয়ে বিপ্লবকে চেয়ারম্যানের পদ দেন। অন্যদিকে বিপ্লবের হাত ধরে তৃণমূলে (TMC) আসা কংগ্রেস বিধায়ক গৌতম দাসকে জেলা সভাপতি করা হয়। এদিকে গৌতম দাসকে দলে নিয়ে এসেছিলেন বিপ্লব। পরে, বিপ্লব বিজেপিতে যোগদান করায় গৌতম দাসকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু, ফের নিজের পুরনো দলে ফিরে আসেন বিপ্লব। তখন গৌতমকে সরিয়ে জেলা সভাপতির পদ দেওয়া হয়  বিপ্লবকে। তারপরেই বিরোধের সূত্রপাত। যা নিয়ে দীর্ঘদিন ‘ঠান্ডা লড়াই’ চলেছে দুইপক্ষে।  নির্বাচন মিটলেও সেই  বিরোধ মেটেনি। ফের সেই বিরোধের ছবিই স্পষ্ট হয়ে উঠল। যদিও, এ বিষয়ে এখনও নীরব জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। আরও পড়ুন: ৫হাজার টাকা দিলেই মিলছে মার্কশিট! জাল শংসাপত্রের ‘আঁতুড়ঘর’ শিলিগুড়ি

 

 

 

Next Article